• ঢাকা সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১
logo

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার বোর্ডের পদত্যাগ চেয়ে সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন

আরটিভি নিউজ

  ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৩৯
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার
ছবি : সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালনা বোর্ডের সকল সদস্যের পদত্যাগ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটির সদস্যরা। এসময় তারা আরও তিনটি দাবি উপস্থাপন করেছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর চাষাঢ়ায় একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী সংগঠনটির সদস্য গোলাম সারোয়ার সাঈদ। এই সময় উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সদস্য সাহেবউল্লাহ রোমান, গোলাম হায়দার কবির, সাফায়েত হাসান, মো. নিজামউদ্দিন, নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী।

বক্তব্যে গোলাম সারোয়ার সাঈদ বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন, তাদের বিরক্ত করা যাবে না। তবে যারা ব্যবসার নাম করে বিগত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন, দেশের সম্পদ লুটপাট করেছেন, বিগত সরকারের নেতাকর্মীদের অর্থপাচারে সহযোগিতা করছেন, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন, তাদেরকে কোনভাবেই ক্ষমা করা হবে না। আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবসায়ী সংগঠনে ফ্যাসিবাদের প্রেসক্রিপশনে যারা এতদিন দখল করে রেখেছিল তাদেরকে দায়িত্বে রাখা যাবে না। ব্যবসায়িক সংগঠনগুলিতে ব্যবসায়ীদের দ্বারা ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে নেতা তৈরি করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের আগে সভাপতি ছিলেন খালেদ হায়দার খান কাজল। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কাজল পদত্যাগ করলে পরিচালক পরিষদের সিদ্ধান্তে সভাপতি হন মডেল ডি ক্যাপিটাল নামে পোশাক কারখানার মালিক মো. মাসুদুজ্জামান।

বিদ্যমান পরিচালনা পরিষদ প্রসঙ্গে গোলাম সারোয়ার সাঈদ বলেন, আমাদের উদারতার সুযোগ নিয়ে অতি চতুরতা সাথে ফ্যাসিবাদের দোসর সোহেল গং (মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল) মাসুদুজ্জামানকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কো-অপ্ট করেন। সেই সাথে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনি পরিবারের ব্যক্তিকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদায়ন করেছেন। আমরা জানি না এ বিষয়ে ত্বকী মঞ্চ নীরব ভূমিকা পালন করছে কেন? খুনি পরিবারের সদস্যকে এত বড় একটি দায়িত্বে রেখে ন্যায় বিচার সম্ভব হবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকে যায়।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। এই ভদ্রলোক চেম্বারকে তার পৈত্রিক সম্পদ মনে করে। যেকোনো সদস্যের অধিকার আছে সংগঠনের গঠনতন্ত্র নেওয়ার। কেননা সংগঠনের কাজ কি এবং সংগঠনে তার দায়িত্ব কী তা তো জানার অধিকার আছে। কিন্তু গঠনতন্ত্র উনি কাউকে দেন না। আর মোর্শেদ সারোয়ার তো তার যোগ্যতায় এই পদে আসেন নাই। সেলিম ওসমানের সমর্থনে, ওসমান পরিবারকে ম্যানেজ করেই তারা ছিলেন।

বক্তব্যে চেম্বারের বর্তমান সভাপতির ব্যাপক সমালোচনা করেন সাঈদ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে মাসুদুজ্জামান সাহেব স্ট্যান্ডবাজিতে শামীম ওসমানকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করলেন কে বা কারা তার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে। তিনি সেই টাকা ফেরত চাইলেন এবং কিছুদিন পরে পুনরায় সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করলেন চাঁদাবাজির টাকা তিনি উদ্ধার করেছেন। অথচ তিনি চাঁদাবাজদের নাম ঠিকানা কিছু বলেনি। তার এই বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জবাসী এবং ব্যবসায়ী মহল বিস্মিত হয়েছে। কে চাঁদা নিয়েছিল এবং কারা ফেরত দিয়ে গেছে তা সভাপতিকে প্রমাণ করতে হবে।

চেম্বারের এজিএম প্রসঙ্গে বলেন, গঠনতন্ত্রের আলোকে কমপক্ষে সাত দিন পূর্বে সাধারণ সভার নোটিশ সকল সদস্যদের কাছে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু তিনি সুকৌশলে তার বলয়ের লোকের বাইরে কাউকে দাওয়াত দেননি, আমি নিজেও চিঠি পাইনি। আমরা সদস্যরা মনে করছি এই এজিএম এর মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগীরা আগস্টের বিপ্লবকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত হিসেবে পুনরায় চেম্বারের বোর্ড দখল করতে চাইছে। যা স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র-জনতা কখনোই মেনে নেবে না। তাই আমরা এই এজিএম কে প্রত্যাখ্যান করছি এবং মাসুদ সাহেবকে সহ বোর্ডের সকল পরিচালকদের পদত্যাগ দাবি করছি।

সদস্যরা মনে করে মাসুদুজ্জামান স্ট্যান্ড বাজির মাধ্যমে এবং গোপনে এজিএম ডাকার মধ্য দিয়ে চেম্বারের প্রেসিডেন্ট পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। সেই সাথে সোহেল গং পরিচালক থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। অবিলম্বে প্রেসিডেন্টসহ পূর্ণাঙ্গ বোর্ড পদত্যাগ করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর মালিক সকল সাধারণ সদস্যবৃন্দ তাই সাধারণ সদস্যদের প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে যদি ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মারা চেম্বারের দখল দায়িত্ব করতে চায় তাহলে সাধারণ সদস্যরা প্রতিরোধ করবে।

এ সময় কিছু হলে এ দায় প্রশাসনকে নিতে হবে বলে স্পষ্ট করেন গোলাম সারোয়ার সাঈদ।

আরটিভি/এএইচ

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়