শপথ নিলেন চসিকের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন
বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন আজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
উপদেষ্টা বলেন, এই অন্তবর্তী সরকার ছাত্র-জনতার আত্মাহুতির মাধ্যমে দায়িত্ব পেয়েছে। মেয়রও এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই আগের ধ্যান-ধারনা পেছনে ফেলে নতুন মেয়র চট্টগ্রাম সিটির মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতা মুক্ত চট্টগ্রাম সিটি দেখতে চাই। নাগরিক সুবিধা যাতে সবাই পায়।
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, আইনি লড়াই জিতে দায়িত্ব পেয়েছি। সিটি হিসেবে চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাচঁবে। জিডিপিতে বড় অবদান চট্টগ্রামের। এই শহরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা এদিকে নজর দেবেন।
তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাটের সমস্যা ও জলাবদ্ধতা দূর করা হবে। যদিও জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ১১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। নগর সরকার এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করলে সেবা ও উন্নয়ন আরও পরিকল্পিতভাবে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শপথগ্রহণ শেষে চসিকের নতুন মেয়র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম ফিরে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চসিকের ষষ্ঠ পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ফলাফলে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম। তবে ওই নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। ওই বছরই ২৪ ফেব্রুয়ারি ৯ জনকে বিবাদী করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন তিনি। এজাহারে তিনি নির্বাচন পরবর্তী ফলাফলসংক্রান্ত প্রকাশিত গেজেট (রেজাউল করিমকে মেয়র ঘোষণা করে) বেআইনি, অবৈধ ও ন্যায় নীতির পরিপন্থী বলে দাবি করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের মুখে চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১ অক্টোবর ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন তিনি। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেন। এই রায়ের ৮ দিন পর ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনার সচিব এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে, গত ১৯ আগস্ট দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার।
আরটিভি/আইএম
মন্তব্য করুন