গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবিতে মানববন্ধন
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ আছমা আক্তার তানজিনাকে শ্বশুর-শাশুড়ির সহায়তায় শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে দেবর সাইমন ও শাহীনের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে চর মথুরা ও চির্কা গ্রামবাসীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
দুই গ্রামের নারী, পুরুষ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষ
কেন্দ্রীয় মিনারের সামনে এসে মানববন্ধন করে। পরে থানা ঘেরাও করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা।
গৃহবধূ আছমার দেবর ও শ্বশুর-শাশুড়ির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফাতেমা বেগম, মিনু আক্তার, ফারিয়া জাহান, রুবেল খান প্রমুখ।
বিক্ষুব্ধরা বলেন, আছমার লাশের গোসল করানোর সময় তার শরীরের স্পর্শকাতর কয়েকটি স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। অথচ বলা হয়েছিল সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন নিশ্চিত করে তাকে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ আমগাছে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। আমরা অভিযুক্তদের বিচার শেষে ফাঁসি দাবি করছি।
উল্লেখ্য, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চির্কা গ্রামের রাঢ়ি বাড়ির হানিফ রাঢ়ির ছেলে মাসুমের সঙ্গে চরমথুরা গ্রামের হাফেজ খানের মেয়ে আসমার প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ১৮ মাস বয়সী আয়ান নামের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে আছমার স্বামী মাসুম মালয়েশিয়াতে থাকলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও দুই দেবর সাইমুন (২২) ও শাহীনসহ (১৭) একসঙ্গে একঘরেই থাকতেন। গত শনিবার (২ নভেম্বর) রাতে আসমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে আছমার ভাইসহ অন্যদের জানানো হয়। আসমার মরদেহের পোস্ট মর্টেমের পর দাফন পূর্ব গোসলের সময় গোপনস্থানসহ কয়েকটি স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। থানা পুলিশও তাদের সুরতহাল রিপোর্টে শরীরে লালচে দাগের কথা উল্লেখ করে। আবার এই ঘটনার আসমার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নানামুখী আচরণ ও দুই দেবরের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে আরও রহস্যময় করে তোলে। ফলে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে এলাকাবাসী ও আসমার স্বজনরা।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এস আই) ইসমাইল হোসেন বলেন, আসমার মরদেহ সুরতহাল করার সময়ে আমার সঙ্গীয় নারী পুলিশ সদস্যসহ অন্যরা আছমার শরীরের কিছু লালচে চিহ্ন থাকার কথা জানান। আমি এগুলো সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার বলেন, আছমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরটিভি/এএএ/এসএ
মন্তব্য করুন