ফের ২ দিনের রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৬ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা আক্তারের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ মামলায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম গণমাধ্যমকে জানান, ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় সংগঠিত একটি হত্যা মামলায় আসামি গোলাম দস্তগীর গাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন
স্ত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা মুয়াজ্জিন, খবর শুনে অসুস্থ প্রবাসী স্বামী
খুলনার পাইকগাছায় পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে ৩ সন্তানকে রেখে ২ সন্তানের জনক মসজিদের মুয়াজ্জিনের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী। মাকে ফিরে আসার জন্য শিশুকন্যার আহাজারি চলছে প্রবাসীর বাড়িতে। এ খবর পেয়ে সৌদিতে অসুস্থ হয়ে গেছেন প্রবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের শাহপাড়া গ্রামে। মাকে ফেরত পেতে থানায় অভিযোগ করেছেন এইচএসসি পড়ুয়া প্রবাসীর বড় মেয়ে।
জানা গেছে, চলতি বছর আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ সকাল ১০টার দিকে পাইকগাছার ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজে পড়ুয়া মেয়ের কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে সুরাইয়া খানম আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের শওকত গাজীর ছেলে মোতাহার রহমান মিন্টুও (৪০) লাপাত্তা। তিনি চাঁদখালী বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ও মসজিদের মুয়াজ্জিন। এক বছর আগে সুরাইয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তারা। সুখের সংসার করার জন্য তারা পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুয়াজ্জিন মিন্টুর স্ত্রী জানান, ১০ বছরের একটি মেয়ে ও ৪ বছরের ছেলে রেখে পরকীয়া করে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন তার স্বামী। এরপর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বাচ্চাদের নিয়ে দরিদ্র বাপের বাড়িতে খুব কষ্টে আছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে পাইকগাছা থানা উপপুলিশ পরিদর্শক শ্যামা প্রসাদ জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কিন্তু তাদের সন্ধান না পাওয়ায় কিছু করতে পারিনি।
আরটিভি/এফএ/এসএ
বেরোবিতেই চাকরি পেলেন আবু সাঈদের বোন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুনকে চাকরি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী নিয়োগপত্রটি আবু সাঈদের বোনের হাতে তুলে দেন।
চাকরিতে যোগ দিয়ে আবেগাপ্লুত সুমি খাতুন বলেন, আমার ভাই যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বড় চাকরির স্বপ্ন দেখেছিল তার ক্যাম্পাসেই আমার চাকরি হলো। এটা আমাদের পুরো পরিবারকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। চাকরিপ্রাপ্তিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সুমি খাতুনকে ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট (স্থায়ী) পদের বিপরীতে সেমিনার অ্যাটেন্ডেন্ট পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হলো।
নিয়োগের শর্তগুলো হলো—এই পদে যোগদানের তারিখ থেকে নিয়োগ কার্যকর হবে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী টাকা ৮৫০০-২০৫৭০/- স্কেলে বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রাপ্য হবেন। কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে গৃহীত ছাড়পত্র যোগদানের সঙ্গে অবশ্যই জমা দিতে হবে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি গ্রহণ করতে হলে আপনাকে ২ (দুই) মাসের অগ্রিম নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১ (এক) মাসের বেতন সম্পূর্ণ করতে হবে। চাকরি গ্রহীতাকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের আওতায় প্রণীত ও প্রণীতব্য সকল সংবিধি, প্রবিধান, রেগুলেশন ও বিধিবিধান দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে। বাধ্যতামূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোষ্ঠী বিমায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
ওপরে উল্লিখিত শর্ত মোতাবেক আপনি এ নিয়োগ গ্রহণ করতে সম্মত থাকলে আগামী ১৫ (পনের) কার্য দিবসের মধ্যে সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদপত্রসহ অন্যান্য সনদপত্রের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার নামাঙ্কিত সিল দ্বারা সত্যায়িত অনুলিপি, অভিজ্ঞতার সনদপত্র, শেষ বেতনের প্রত্যয়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এবং যোগদান পত্র নিম্নস্বাক্ষরকারীর দফতরে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে বেরোবির সামনে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় বেরোবির শিক্ষার্থী ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ এর প্রতিবাদ করলে তাকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি ছোড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আবু সাঈদের, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় গণ-অভ্যুত্থানে।
আরটিভি/একে/এসএ
রিসোর্ট থেকে সাবেক অতিরিক্ত সচিবের মরদেহ উদ্ধার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি রিসোর্ট থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সালাহ উদ্দিন মাহমুদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে উপজেলার রাধানগরের বালিশিরা রিসোর্ট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সরকারি সফরে মৌলভীবাজার আসেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। বর্তমানে একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসএমই ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে কর্মরত। বুধবারও এসএমই ফাউন্ডেশনের কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশ নেন তিনি। প্রোগ্রাম শেষ করে রাত ১০টার দিকে শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা রিসোর্টে ঘুমাতে যান। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রুমে গেলে ভিতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ বিকল্প উপায়ে জানালা দিয়ে রুমে প্রবেশ করে মরদেহ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সকালেও শ্রীমঙ্গলে এসএমই ফাউন্ডেশনের কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে রিসোর্ট থেকে মরদেহ উদ্ধার করি। রাতের কোনো একসময় তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে স্বজনরা মরদেহ গ্রহণ করতে দেরি হওয়ায় সচিবের সহকর্মী এসএমই ফাউন্ডেশনের এজিএম মাসুদুর রহমানের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। তিনি ঢাকায় রওনা হয়েছেন।
আরটিভি/এএএ/এসএ
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস ডিসির
চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপে অনুষ্ঠানের মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেছেন একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। বৃহস্পতিবারের (১০ অক্টোবর) এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় তা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে ঘটেছে ঘটনাটি। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। তার মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার প্রায় ৩ মিনিটের একটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, মণ্ডপের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন ছয়জন তরুণ। এ সময় একটি ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন তারা। আশপাশে উপস্থিত কয়েকজনকে সেই ঘটনা মুঠোফোনে ধারণ করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।
পরে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, এটি ছাত্রশিবিরের কোনো অঙ্গসংগঠন নয়। তবে জামায়েতে ইসলামীর একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেছেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এদিকে পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্র বলছে, সন্ধ্যায় মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন তরুণ সেখানে উপস্থিত হয়ে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন বলে মঞ্চে ওঠেন। পরে তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। এরপর তারা ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে নেমে চলে যান।
ওই ৬ তরুণকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কি না, প্রশ্ন করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন বলেন, ওই তরুণেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বলেছেন, তারা মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন। পরে তারা উঠে গান শুরু করেন এবং দুটি গান পরিবেশন শেষে তারা চলে যান। এ বিষয়ে জানতে সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সেখানে চট্টগ্রামের আদালত ঘোষিত সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য, এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন ফোন ধরেননি। আর জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, তিনি এদিন কোনো পূজামণ্ডপে যাননি।
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এ সময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। এ বিষয়ে রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে।
এদিকে পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ পরিবেশিত হওয়ায় পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। রাতেই নগরের জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপের মঞ্চে তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন তিনি।
আরটিভি/এসএইচএম
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত বিতর্কে গ্রেপ্তার ১
চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপের অনুষ্ঠানে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা যায়। তাৎক্ষণিক ভাবে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।
একই ঘটনায় পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।
জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপে। পূজা কমিটির অনুমতি নিয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য মঞ্চে বাদ্যযন্ত্র ছাড়া দুটি গান পরিবেশন করেন। যা পরে বিতর্কের জন্ম দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে ভিন্ন গান বাজিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ওই দুটি গানের মধ্যে একটি গান ছিল ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ অপরটি হচ্ছে ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। এর কিছুক্ষণের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। ছড়িয়ে পড়া তিন মিনিটের একটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, মণ্ডপের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন ছয়জন তরুণ।
পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র বলছে, সন্ধ্যায় মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন তরুণ সেখানে উপস্থিত হয়ে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন বলে মঞ্চে ওঠেন। পরে তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। এরপর তারা ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে নেমে চলে যান।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন বলেন, ওই তরুণেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বলেছেন, তারা মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন। পরে তারা উঠে গান শুরু করেন এবং দুটি গান পরিবেশন শেষে তারা চলে যান।
পরে পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। রাতেই নগরের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপের মঞ্চে তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সেখানে চট্টগ্রামের আদালত ঘোষিত সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য, এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন ফোন ধরেননি। আর জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, তিনি এদিন কোনো পূজামণ্ডপে যাননি।
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এ সময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। এ বিষয়ে রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে।
এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবিরের অবস্থান তুলে ধরে এ দাবি জানান তিনি।
ওই পোস্টে জাহিদুল ইসলাম লিখেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। আমি দায় নিয়ে বলছি, এর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শিবির কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন কাজ কখনোই সমর্থন করে না। তাই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি জানাচ্ছি, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সত্য সবার সামনে উঠে আসুক। কেউ দোষী হলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়া হোক।’
সত্যতা যাচাই না করেই বিভিন্ন সময় শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয় জানিয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, সত্যতা যাচাই না করেই যারা শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তারা একটা সময় গিয়ে নিজেদের বিবেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। এ ধরনের কাজ থেকে ভবিষ্যতে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।
আরটিভি/এএইচ
পূজামণ্ডপে গীতার শ্লোক পাঠ করে ভাইরাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে একটি পূজামণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মতিয়ার রহমান।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপে মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে ঘটে এ ঘটনা। জামায়াত নেতার সেই গীতা পাঠের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ইতোমধ্যে। অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, বক্তব্যের একপর্যায়ে উপস্থিত সবাইকে গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে শোনান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা উলুধ্বনি দেন ও শঙ্খ বাজান। শ্লোক পাঠ শেষে জামায়াতে ইসলামীর এ নেতা আশ্বাস দেন, আগামীতে নির্বাচিত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, আমি একা না আমার সাথে বিএনপির নেতারাও আছেন।
বক্তব্যের শুরুতে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, এই কোটচাঁদপুরের আলো-বাতাস, মাটি ও মায়া-মমতাই বেড়ে উঠেছি আমি। ইসলামি আদর্শের একজন ব্যক্তি হলেও আমার ভেতর একজন ভালো সনাতনী হিন্দু ব্রাহ্মণ বাস করেন। আমার ভেতরে বাস করেন একজন ভালো খ্রিষ্টান এবং একজন ভালো মুসলিমও।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে এরপর তিনি বলেন, বিশ্বাস করুন, হিন্দু ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে মুসলমানদের কোরআন পাওয়ারও সাড়ে ৪ হাজার বছর পূর্বে। এই জাতিটা বাস করতো ভারতের কালীকোটের মালমল সিন্দুর হ্রদের অববাহিকায়। আড়াই হাজার বছর পর্যন্ত ওরা সেখানে বাস করেছে।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর রাত ১০টার দিকে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান কোটচাঁদপুর উপজেলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা। অন্যান্যদের বক্তব্যের পর সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। বক্তব্যে ইসলাম ও সনাতন ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপের আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি গুরুদাস বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর জামায়াতের নেতা মতিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন মণ্ডপে এসেছিলেন। বক্তব্যে তিনি আমাদের ধর্ম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান দেন। পরে গীতা থেকে একটি শ্লোকও পাঠ করেন।
আরটিভি/এসএইচএম
ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের পর চলে গেল শিশু ছেলেও
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ভিমরুলের কামড়ে বাবা আবুল কাশেম ও মেয়ে লাবিবা আক্তারের মৃত্যুর পর ছেলে সিফাত উল্লাহও (৬) মারা গেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে একই দিন দুপুর ১টায় আবুল কাশেম ও বিকেল ৩টায় তার মেয়ে লাবিবা (৮) মারা যায়। মর্মান্তিক ঘটনাটি একই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের দুধনই বাজার মসজিদের ইমাম মো. আবুল কাশেম (৫০), তার আট বছর বয়সী মেয়ে লাবিবা আক্তার ও ছেলে সিফাতুল্লাহ (৬)। আবুল কাশেম উপজেলার দুধনই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দুধনই বাজার জামে মসজিদে ইমামতি করতেন, এরমধ্যে লাবিবা ইদারাতুল কুরআন মাদরাসায় প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টায় দুধনই বাজার থেকে লাকড়ি আনার জন্য মেয়ে লাবিবা এবং ছেলে সিফাতুল্লাহকে নিয়ে নৌকা দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন আবুল কাশেম। তবে বাড়ির পাশেই একটি বাঁশঝাড়ে তাদের নৌকা আটকে যায়। ওই সময় হঠাৎ বাঁশঝাড় থেকে ভিমরুল বেরিয়ে এসে আবুল কাশেম ও তার দুই সন্তানকে কামড়াতে শুরু করে। সে সময় আবুল কাশেম প্রথমে সন্তানদের রক্ষা করার চেষ্টা করলেও পরে আর সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাদের তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বাবা আবুল কাশেম এবং ছেলে সিফাতুল্লাহকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে আবুল কাশেম মারা যায়। এরপর বিকেল ৩টায় ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যায় মেয়ে লাবিবা। সবশেষ রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিফাতুল্লাহরও মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক বলেন, এলাকায় একদিকে চলছে বন্যার মতো ভয়াবহ দুর্যোগ। অন্যদিকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু। নিহতের পরিবার এবং স্বজনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার সিফাত উল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরটিভি/এফআই