বিএনপির গিয়াস উদ্দিনকে শামীম ওসমানের সঙ্গে তুলনা নেতাকর্মীদের
গিয়াস উদ্দিন এবং শামীম ওসমান একই সূত্রে গাঁথা। একজন প্রকাশ্যে খুন করায় একজন গোপনে খুনের মামলা দেয়। এ দুজনকেই গডফাদারের তকমা দেয় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ফতুল্লা থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত র্যালিপূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন তরা।
গিয়াস উদ্দিনকে ইঙ্গিত করে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, যারা মাঠে ছিলনা, যারা ২০০১ সালে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি করেছে, এখন তারাই শেল্টার দিচ্ছেন। আমরা উড়ে এসে জুড়ে বসিনি, আমরা তৃণমূল থেকে উঠে আসা কর্মী। আমাদের হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, আপনারা আন্দোলনের সময় কোথায় ছিলেন। বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করুন।
সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, আপনি মনে প্রাণে শেখ মুজিবের আদর্শ লালন করেন বলেই আপনি ১৫ আগস্ট পালন করেছেন। নাসিক নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পর মিষ্টি খাইয়ে খুশি রাখার চেষ্টা করেছেন। আপনার পরিবারের সদস্যরা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। এসব করে আপনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। আর এখন বাঘ সেজে হুংকার দিচ্ছেন, বাঘ সাজতে চান তাতে সমস্যা নাই কিন্তু এই বাঘকে আমরা ভয় পাই না। আমার প্রশ্ন, ৫ আগস্টের আগে আপনি কোথায় ছিলেন, তখন কেন বাঘ সাজেননি। আন্দোলন করতে গিয়ে যে গুলি শহিদুল ইসলাম টিটু খেয়েছে তা আপনার খাওয়ার কথা, তখন আপনি কোথায় ছিলেন?
তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের ১৭দিন আগে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে এসে এমপি হয়ে আপনি বিএনপির ত্যাগী, নিবেদিত নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন চালিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলনের বাইরে ছিলেন। আপনাকে ফতুল্লা বিএনপি সমর্থন দিয়ে আলোচনায় এনে জেলা বিএনপির সভাপতির জায়গায় বসানো হয়েছে। আপনি এ পদে এসেই আগের ন্যায় বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছেন। যারা আওয়ামী লীগের আদর্শ লালন করে তারা বিএনপির ত্যাগীদের সহ্য করতে পারবে না এটাই প্রমাণিত।
গিয়াস উদ্দিন ৫ আগস্টের পর বহিষ্কার খেলায় লিপ্ত হয়েছেন দাবি করে তিনি আরও বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে কোথায় কার মার্কেট দখল করেছেন, লুটপাট কি করেছেন সব আমরা জানি, আপনি এর দায় এড়াতে পারবেন না। আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ নাই, শামীম ওসমানের মতো গডফাদারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমরা রাজনীতি করেছি, সেই শামীম ওসমান পালিয়েছে আর আপনি এসে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে হুমকি দিচ্ছেন। এসব করে আপনি বিএনপিকে বিতর্কিত করতে যা করনীয় আপনি সব করছেন। আপনার পরিবার কি অপরাধ করেছেন, আর আমরা কি অপরাধ করেছি। একটি মঞ্চ করে বসেন ফতুল্লায় কি হয়েছে আর সিদ্ধিরগঞ্জে কি হয়েছে। তখনই বুঝা যাবে কে কি দখল করেছে। কে কতোটুকু অন্যায় করেছে।
আপনি প্রতিদিন অন্যায় করছেন আর সভামঞ্চে বসে অন্যের সমালোচনা করছেন, অন্যের অন্যায়ের কথা আর কতদিন বলবেন। আপনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কথা বলে বিএনপিকে আর বিতর্কিত করবেন না।
সভা শেষে ফতুল্লা থানার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে আসা নেতাকর্মীদের নিয়ে র্যালি বের হয়। র্যালিটি ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে পঞ্চবটী বাস স্ট্যান্ড গিয়ে শেষ হয়।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ছাড়াও
এতে যোগ দেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, থানা শ্রমিকদলের আহবায়ক শাহ আলম, থানা যুবদলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল খালেক টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবুল আহমেদ, বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক সুমন আকবর, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার, ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকীসহ অনেকে।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন