৬ দফা দাবিতে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ঘেরাও কর্মসূচি
স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে ৬ দফা দাবিতে মহাখালী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক শতাধিক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য খাতে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিএসসি টেকনোলজিস্টদের কাজে লাগাতে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের অর্গানোগ্রামে কোনো পদ নেই।
তারা বলেন, সরকার জনগণের চিকিৎসাসেবার মতো মৌলিক অধিকার পূরণে দক্ষ জনবল হিসেবে তৈরি করলেও তাদের কাজে লাগাতে পারছে না। বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েও বেকার ঘুরছেন। ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে দেশের মানুষের গুণগত ও মানসম্মত সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হচ্ছে না।
বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ উত্থাপিত ৬ দফা দাবি হলো-
১. মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দক্ষতা উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পরিদপ্তর’ গঠন করতে হবে।
২. দেশের ‘ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি)’ গুলোকে মেডিকেল টেকনোলজি কলেজে রূপান্তর করে ঢাকার আইএইচটিকে কেন্দ্র করে একটি স্বতন্ত্র মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দক্ষ বিষয়ভিত্তিক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের প্রভাষক হতে অধ্যাপক পর্যন্ত বিভিন্ন পদে পদায়ন করতে হবে।
৩. মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদাসহ) বাস্তবায়ন পূর্বক ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।
৪. গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি করে স্ট্যান্ডার্ড সেট আপ ও নিয়োগবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের জন্য প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৬. বিএসসি ও এমএসসি কোর্সে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ভাতা ও স্কলারশিপসহ সব অনুষদের বিএসসি কোর্স চালু করে শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।
দাবিগুলো মেনে নেওয়া হলে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের পেশাগত মর্যাদা সুরক্ষিত হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানানো হয় ঘেরাও কর্মসূচি থেকে।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে দাবি পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যের শিকার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে সারাদেশে একযোগে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে ছাত্র পেশাজীবীদের সঙ্গে আন্দোলনের দাবির প্রেক্ষিতে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি, একটা সুরাহা হবে।’
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (প্রশাসন) বিএমটিএ সভাপতি খাজা মইনুদ্দিন মঞ্জু, মহাসচিব বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হাফিজুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব কাজী মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন অর রশিদ, এমটিএফ সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা।
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন