কুয়াকাটায় তীর্থযাত্রীদের ঢল
কুয়াকাটায় রাস উৎসবে তীর্থযাত্রীদের ঢল নেমেছে। গতকাল বিকেল থেকে সনাতন ধর্মলম্বীরা রাস পূজা উদযাপন করতে কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেন। পূর্ণার্থীদের আগমনে টইটম্বুর কুয়াকাটার শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের প্রাঙ্গণসহ কুয়াকাটা সৈকত।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে ২ কিলোমিটার ও পশ্চিমে ১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে লোকে লোকারণ্য। সকাল থেকেই সনাতন ধর্মের লোকেরা ধর্মীয় আচার আচরণ পালন করার জন্য শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির এবং আশপাশে আসন পেতে বসতে শুরু করছে।
এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো তীর্থযাত্রীদের পদভারে মুখরিত হচ্ছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা এমনটাই বলেন কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরন দাস।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আজ ভোর ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে পূর্ণিমা, থাকবে শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৩টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পূর্ণিমার এ তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচন ও পূণ্যলাভের আশায় পূর্ণিমাতিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ কুয়াকাটায় সমুদ্রে পুণ্যস্নান করবেন।
কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মণ্ডল বলেন, আজ সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নাম কীর্তন, ভাগবত পাঠ ও আরতি। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন ভারতের কবিতা ঘোষ।
এ সময় তিনি বলেন, গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে রাস উৎসব। আর আগামীকাল শনিবার সূর্যোদয়ের আগেই রাস পূর্ণিমা লগ্ন অনুযায়ী সাগর সৈকত কুয়াকাটায় পাপ মোচনের লাভের আশায় নামবে ভক্তদের ঢল। একই দিন সৈকতে অনেকেই আবার ভিন্ন ভিন্ন মানত করা পূজা দিবেন পুরোহিত এনে। নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষও মিলিত হবে রাস পূজা, সমুদ্র স্নানানুষ্ঠানে।
রাস উৎসবে অংশগ্রহণ করা সৌমির বলেন, সারা বছর অপেক্ষা করি এ দিনটির জন্য। আমি ৫ বছর ধরে স্নানে আসি এবং আমার মানত করা পূজা দেই গঙ্গায়। যাতে গঙ্গা মা আমাকে মঙ্গল করে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন, গতকাল থেকেই পুরো কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোন দুষ্কৃতকারী যেন কোন সমস্যা না করতে পারে সে বিষয় সজাগ রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছর ধরে চলে আসা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে আমরা ধারণা করছি লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। কুয়াকাটায় পুণ্যস্নানে আগত পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও সার্বক্ষণিক থানা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন