কারসাজিতে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে আলুর বীজ
জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকায় আলুর বীজ কেনা শুরু হয়েছে। তবে এই আলুর বীজ নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি সিন্ডিকেট। এ কারণে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বীজ আলু কিনতে হচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ, কিছু অতি লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে আলুর বীজ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলা কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর পাঁচবিবি হিচমী, কোমরগ্রাম, চৌমুহনী, ধারকীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আলুর বীজ ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংকটের অজুহাতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ আলু কিনতে হচ্ছে। বীজ কিনে শেষ অবধি যদি বাজারমূল্য ভালো না পাওয়া যায় তবে সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তাই স্বপ্নের সঙ্গে কিছুটা শঙ্কা নিয়েই এবার আলুর চাষ করছেন তারা।
মেসার্স লামিম ট্রেডার্সের আব্দুস সাত্তার বলেন, ব্র্যাকের বীজ বিক্রি করি। যে দামে তারা আমাদের দিয়েছে, সেই দামেই বীজ বিক্রি করছি। কতিপয় কিছু অসৎ ব্যবসায়ী যাদের লাইসেন্স নেই, তারা সিন্ডিকেট করে বীজের দাম বেশি নিচ্ছেন। এতে আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা দাম বেশি নিচ্ছি না।
জয়পুরহাটে আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ৪০ কেজি প্রতি বস্তা আলুর বীজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করছেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছে আলুর বীজ বিক্রির পর কোনো রিসিভ দিচ্ছেন না। আবার অনেকে রিসিভে সরকারি দাম লেখে দিলেও দাম নিচ্ছেন অতিরিক্ত। সরকারি যে রেট দিয়েছে আলু বীজের জন্য সেই রেটে আমরা ডিলারের কাছে গিয়ে আলু পাচ্ছি না।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, আলু বীজের বিষয়টি নিয়ে আমরা কৃষি বিপণন থেকে নিয়মিত মনিটরিং করছি। কয়েক দিন আগে বীজের দোকানে অভিযান চালানো হয়েছিল। সে সময় কয়েকজনকে কৃষি বিপণন আইনে জরিমানাও করেছি। সেই সঙ্গে তাদের সতর্ক করা হয়েছে যেন অতিরিক্ত মূল্যে কেউ বীজ বিক্রি না করে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, জেলায় এবার ৩৯ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে আলুর বীজের চাহিদা রয়েছে ৫৮ হাজার মেট্রিক টন। এরই মধ্যে দুই হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা বীজ ডিলারের সাথে মতবিনিময় করেছি এবং আমরা মাঠ মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি যাতে করে কোন ডিলারের কাছে বেশি দামে বীজ বিক্রি না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সামগ্রিকভাবে কাজ করছি। কেউ বেশি দামে আলুর বীজ বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/এমএ
মন্তব্য করুন