পরীক্ষা চলাকালে অসুস্থ ৩০ ছাত্রী, যা বলছে কর্তৃপক্ষ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে একে একে ৩০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
যদিও ওই ছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ওই শিক্ষার্থীরা গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
আর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, কিছুদিন আগে এই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়া হয়। এরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোববার শ্বাসকষ্ট হওয়ার পর বিদ্যালয়ের ৩০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতিতে ওই ছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে একটি মেডিকেল টিম গঠন করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন।
বিদ্যালয়ের অসুস্থ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, গত ২২ অক্টোবর কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা নেয়। রোববার সকালে বিদ্যালয়ে সব শ্রেণির ৩০ নম্বরের মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা চলাকালে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাইফার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর একে একে সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ছাত্রীদের প্রথমে পাশের কসবা উপজেলার চারগাছ এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সাতজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাকি শিক্ষার্থীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনা হয়। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাদের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার ঢালী, সিভিল সার্জন মোহাম্মদ রোমান মিয়া, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন ভূঁইয়া ও গোপাল পাল মেডিসিন ওয়ার্ডে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে যান।
তবে এ বিষয়ে কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক মো. আল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের হঠাৎ খিঁচুনি, বুকে ব্যথা, হাত-পা ঠান্ডা অনুভবসহ বুকব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। মূল্যায়ন পরীক্ষা চলাকালে একে একে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তা না হলে অসুস্থ হচ্ছে কেন। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হোক।
প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, গত ২২ অক্টোবর ২০০ থেকে ২৫০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নোমান মিয়া বলেন, জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের টিকা নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর কোনো প্রতিক্রিয়া সাধারণত দেখা দেয় না। এটিকে মাস সাইকোজেনিক ইলনেস বলে। একজন অসুস্থ হলে আশপাশের আরও মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা তিন সদস্যের একটি মেডিকেল দল গঠন করেছি। তাদের সরকারিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন