• ঢাকা রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

মুদি দোকানি রইস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৪
ছবি : আরটিভি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের মুদি দোকানি রইস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, ভিকটিমের লুট করা মোবাইল এবং ট্রাউজার ও লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান।

নিহত রইস উদ্দিন কাঙলাকান্দা নলুয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় নলুয়া বাজারে তার মুদি দোকান রয়েছে। অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই গ্রামের আজিজ আলী মণ্ডলের ছেলে মো. মামুন (২৮) ও একই উপজেলার জুগ্নীদহ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত রানু শেখের ছেলে মো. জয়নাল শেখ (৫০)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, রইস উদ্দিন পেশায় একজন মুদি দোকানদার ছিলেন। তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে তিনি আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আনুমানিক ৮-৯ বছর পূর্বে তার দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। এরপর থেকে তিনি একাই থাকতেন, নিজেই রান্না করে খেতেন। তিনি প্রতিদিন সকাল ৬টায় এসে দোকান খুলতেন এবং রাত ১০টায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি যেতেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি গত ৩ নভেম্বর সকালে দোকানে আসেন। কিন্তু রাতে আর দোকান থেকে বাড়ি ফেরেন নাই। তার আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজখবর করতে থাকেন এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ পান। কোথাও খুঁজে না পেয়ে গত ৮ নভেম্বর তার ছেলে দুলাল হোসেন শাহজাদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে শাহজাদপুর পৌর এলাকার নলুয়া বাজারের পাশের একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মৃত রইস উদ্দিনের ছেলে দুলাল হোসেন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, রইস উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধারের পরে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে নলুয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৃত রইস হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাদের দেখানো টয়লেট হতে ভিকটিম রইস এর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, আসামি মামুনের বাড়ি থেকে রইসের ট্রাউজার এবং রইসের বাড়ির পাশের ডোবা হতে রক্তমাখা লুঙ্গি ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে।

হত্যাকাণ্ডের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. মামুন ও মো. জয়নাল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মামুন পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং জয়নাল ভবঘুরে টাইপের মানুষ। মামুন ও জয়নাল মাঝে মাঝে ভিকটিম রইস এর দোকানে বসে আড্ডা দিত এবং পূর্ব পরিচিত ছিল। মামুন ও জয়নাল এর কাছে টাকা না থাকায় তারা ব্যবসায়ী রইসের টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক মামুন শাহজাদপুর থেকে একটি চাকু কেনে। এরপর ৩ নভেম্বর রাত ১০টা থেকে তারা রইসকে অনুসরণ করতে শুরু করে। সেসময় রইস বাড়ি যাওয়ার পরে রাত আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে মামুন এবং জয়নাল রইসের ভাড়া বাড়িতে গিয়ে রইসকে ডাক দেয়। রইস বাইরে বের হলে জয়নাল রইসকে চেপে ধরলে রইস মাটিতে পড়ে যায়।

এ সময় মামুন রইসকে জবাই করে হত্যা করে এবং রইসের ঘরের তোষকের নিচে থাকা ১৬ হাজার টাকা নেয় মামুন। এরপরে রইসের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল এবং রক্ত গামলাতে করে টয়লেটে ফেলে দেয়। মামুনের রক্তমাখা লুঙ্গি এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু বাড়ির পাশের ডোবাতে ফেলে দেয়। এরপর মামুন রইসের লাশ একটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে জয়নালের সহায়তায় জনৈক শফিকুলের ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর লুটের টাকার মধ্যে থেকে মামুন নিজে ১০ হাজার টাকা নেয় এবং জয়নালকে ৬ হাজার টাকা দেয়। এরপর তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা রইসকে হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের এমন বিবরণ দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর রাতে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন মুদি দোকানি রইস উদ্দিন। এরপর ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে শাহজাদপুর পৌর এলাকার নলুয়া বাজারের পাশের একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরটিভি/এএএ/এস

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাসচাপায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত
যুবদল নেতা হত্যা, আ.লীগ নেতা ৫ দিনের রিমান্ডে
সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা ফিলিপস কারাগারে
৩ মাস পর চালু হলো সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস