নারায়ণগঞ্জে আপত্তির মুখে বন্ধ হলো ‘সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’
নারায়ণগঞ্জে হেফাজত নেতাদের আপত্তি ও নিরাপত্তাহীনতার জেরে দুই দিনব্যাপী ‘মহতী সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ হয়ে গেছে। সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এ নিয়ে লালনভক্ত ও নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতিকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার মেলা ও সাধুসঙ্গ উপলক্ষে কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু-গুরু ও লালন-ভক্তরা নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় মেলা পরিচালনার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে এ লালন মেলার আয়োজন করা হয়। এবারও মেলা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল আশ্রম কর্তৃপক্ষ। সেই উপলক্ষে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানান প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৫ নভেম্বর মেলা বন্ধের দাবিতে ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এদিন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল এই মেলাকে ইমানবিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে প্রতিহত করার ঘোষণা করেন। ওই নেতার হুমকির প্রেক্ষিতে ২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন মুক্তিধাম আশ্রমের লোকজন ও নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতিকর্মীরা ।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, লালন মেলা আয়োজন নিয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমাম, মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামী দলের তীব্র আপত্তি আছে। এ জন্য তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদন চাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে বলে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়। এ জন্য মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ্ জালাল বলেন, আমরা তো এখানে মারামারি করার জন্য আসিনি। আমরা তো শান্তি চাই।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম জানান, সেখানে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। লালনভক্তদের যাতে কেউ ক্ষতি না করতে পারে, সে জন্য তাদের নিরাপত্তায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
এদিকে, লালন মেলা বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি।
আরটিভি/এএএ-টি
মন্তব্য করুন