• ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১
logo

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-২

তদারকির অভাবে অধিকাংশ পিএসএফ অকেজো, পুকুরের পানিই ভরসা

  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৪
ছবি : আরটিভি

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ভূগর্ভস্থ মিষ্টি পানির স্তর নেমে যাওয়া, লবণাক্ততা ও আর্সেনিকের মাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পের ধরণ বদল করে সরকারিভাবে জনগণের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে, অগভীর নলকূপ, গভীর নলকূপ, পিএসএফ (পন্ড স্যান্ড ফিল্টার), সোলার পিএসএফ। বর্তমানে এক হাজার থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ট্যাংকি বিতরণ করা হচ্ছে।

বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারীভাবে ১৯৯২ সাল থেকে এই পর্যন্ত জেলায় ১৬ হাজার ৩৬১টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় ১৪ হাজার ১২৬টি। পিএসএফ স্থাপন করা হয় ২ হাজার ৭৯৯টি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে লবণাক্ত এলাকাগুলোতে সুপেয় পানির সংকট মোকাবেলায় সরকারী ও বেসরকারি উদ্যোগে পুকুর পাড়ে তৈরি করা হয় পিএসএফ (পন্ড স্যান্ড ফিল্টার)। কিন্তু তদারকির অভাবে অধিকাংশ পিএসএফ অকেজো হয়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে ওইসব এলাকার মানুষ সরাসরি পুকুরের পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে এসব এলাকার প্রতিটি পরিবারের পেটের পীড়া নিত্যসঙ্গী হয়েছে।

সরকারী হিসাবে জেলায় সরকারীভাবে স্থাপন করা ২ হাজার ৭৯৯টি পিএসএফ এর মধ্যে চালু রয়েছে ১ হাজার ৪৭৩টি। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে এর কোন মিল নেই। জেলায় সামান্য কিছু পিএসএফ এখন চালু থাকলেও অধিকাংশ পিএসএফ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো রয়েছে। কোথাও কোথা পিএসএফ এর ভিতর বড় বড় গাছ জন্ম নিয়েছে। কোথাও কোথাও এসব পিএসএফ এর পাশে নতুন বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে গড়ে তৈরি করা পানির ফিল্টারগুলোও জনসচেতনতার অভাবে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে নিরুপায় হয়ে অস্বাস্থ্যকর পুকুর থেকে তোলা পানি দিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছেন স্থানীয়রা। আবার এই পুকুরের পানি ভ্যান গাড়িতে করে সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে।

রামপালের ফুলপুকুরে পানি নিতে আসা শিবানি রানী জানান, এই পুকুরই এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা। প্রায় ১ কিলোমিটার দূরের এই পুকুর থেকে পানি নিয়ে তারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন। এটা অনেক কষ্টের। পানির সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি এলাকার ডা. মিজানুর রহমান ডিয়ার বলেন, দৈবজ্ঞহাটি কলেজ পুকুরে স্থাপন করা সরকারী পিএসএফটি এখন ভেঙ্গে প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। তাই পানির ব্যাপক সংকট রয়েছে। এজন্য এই এলাকার অনেক লোক প্রায়ই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।

রামপালের পরিবেশবাদী নেতা এম এ সবুর রানা বলেন, যথাযথ সমীক্ষা না করে, সরকারের নেয়া পিএসএফ প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। হাতে গোনা দুই একটি ছাড়া বেশিরভাগ পিএসএফ ও পানি শোধনাগার বন্ধ হয়ে গেছে। স্থায়ীভাবে খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত মল্লিক বলেন, সরকারীভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার পর স্থানীয়রা এটির তত্ত্বাবধায়ন করেন। তারা এটি সঠিক ভাবে ব্যবহার না করলে নষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তিনি দাবি করেন বেশিরভাগ পিএসএফ এখনও চালু রয়েছে।

আরটিভি/এএএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাগেরহাটের শরণখোলায় ট্রলিচাপায় চালক নিহত
বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
বাগেরহাটে আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা মিয়া গ্রেপ্তার
স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল শিশুর