ধর্ষণের মামলা নিতে গড়িমসি, টাকা চাওয়ার অভিযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্কুলছাত্রী কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনার সাতদিন পর মামলা গ্রহণ করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাবা অভিযোগ করেন মেয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হাসপাতালে যাওয়ার যানবাহন খরচের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস সাত হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় মামলার বিষয়টি জানিয়েছেন শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল।
ভিকটিমের বাবা শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শ্রীপুর একজনের নাম উল্লেখসহ তার সহযোগী অজ্ঞাতদের আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করে।
এর আগে, রোববার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের কাফিলতলী গ্রামের ঘাটপাড় (বিল্লালের বাড়ির কাছে) এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সৈকত ওরফে জাহিদ (২০) শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের হালুকাইদ গ্রামের জালালের ছেলে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, এক মাস আগে ফেসবুকে সৈকতের সঙ্গে মেয়ের পরিচয় হয়। সেই সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৮ ডিসেম্বর দেখা করার কথা বলে ডেকে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ করে সৈকত। ধর্ষণে তাকে সহযোগিতা করেছে তিন-চার জন সহযোগী। পরে মেয়েকে রেখে পালিয়ে যায় তারা। ১০ ডিসেম্বর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি বলেন, ঘটনার সাক্ষী-প্রমাণ নেই। এই মামলা নেওয়া যাবে না। ওই দিন রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে থানা থেকে চলে আসি। ১১ ডিসেম্বর বিকালে মেয়েকে নিয়ে আবার থানায় যাই। ওই দিন রাত ১০টার দিকে থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুসকে ঘটনাস্থলে পাঠান ওসি। এ সময় এসআই কুদ্দুস আমার কাছে মেয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হাসপাতালে যাওয়ার খরচের জন্য সাত হাজার টাকা ঘুষ চান। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর দুদিন মেয়েকে থানায় রেখে দেয় পুলিশ। আমি বাড়িতে চলে আসি। পরদিন আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে মেয়েকে আমার কাছে দিয়ে দেয় পুলিশ। রবিবার আবারও স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে থানায় নিয়ে যেতে বলে। আমার মেয়ে এখনও থানায় রয়েছে।
শ্রীপুর থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হাসপাতালে যাওয়ার যানবাহন খরচের জন্য ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে রাতে আমি এক ঘন্টার জন্য ওই এলাকায় (ঘটনাস্থল) তদন্তে যাই। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওসি স্যারকে জানালে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) মামলা রুজু হয়।
ঘটনার ৮ দিন পর মামলা নেওয়ার বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ভিকটিমের বাবা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) থানায় মামলা করার জন্য আসে। এর আগে, তার সাথে আমার দেখা হয়নি। দেরিতে মামলা গ্রহণ করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তার সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন। ভিকটিম শ্রীপুর থানা হেফাজতে রয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
আরটিভি/একে
মন্তব্য করুন