স্বাধীনতার এত বছর পরেও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি: আমীর খসরু
স্বাধীনতার এত বছর পর এখনও আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে বিজয় দিবস উপলক্ষে মহানগর বিএনপির বিজয় র্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, স্বাধীনতার পর যখন বাকশাল হয়, এই বাকশালের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলকে মুখ বন্ধ ঘোষণা করে দেয়, সমস্ত সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রিত করে এবং মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের লক্ষ মানুষের ওপর গুম, খুন, নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়। সেখান থেকে আবারো মুক্ত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। প্রথম সংস্কারটা হলো- একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র। এটি ছিল, প্রথম সংস্কার বাংলাদেশের। সংস্কার সংস্কার যারা বলে তারা এগুলো বোঝে নাই, চিন্তা করেনি। দ্বিতীয় সংস্কার হলো সরকারচালিত অর্থনীতি। যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বাকশালিরা লুটপাট করে দেশের দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল। সেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৃতীয় সংস্কার করেছিলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে।
তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে সমস্ত বাংলাদেশিদের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের সমান অধিকার পেয়েছিল। এজন্য শ্রমিক, কিশোর, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সকলে মিলে আরেকটি নতুন বাংলাদেশ গড়েছিল সেদিন। সেই সংস্কারের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আজকের যে গার্মেন্টস শিল্প অর্থনীতিতে প্রথম অবদান রাখছে। সেটা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে গার্মেন্টস শিল্প নীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রথম পিলার, প্রথম শক্তি। বিদেশে মানুষ পাঠিয়ে যে রেমিটেন্স আজ বাংলাদেশে আসছে, দেশের মানুষ বাইরে গিয়ে কাজ করছে, সেটার অবদান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের।
আমীর খসরু বলেন, মহান বিজয়ের জন্য চট্টগ্রামের গুরুত্ব অনেক। আজকের এই দিনে চট্টগ্রামের বিপ্লব উদ্যান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। দেশের প্রধান ও প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। এই চট্টগ্রাম রেডিও স্টেশন থেকে প্রথম তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। আজকের স্বাধীনতা পাওয়ার পেছনে যুদ্ধের যে প্রেরণা, সেটা চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামী দিনের সংস্কারের কথা যদি বলা হয়, আমরা যে ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছি। প্রতিজ্ঞা করেছি, বিএনপিসহ প্রায় ৫০টি দলের ঐক্যমতে আমরা আমাদের ৩১ দফার সংস্কার পরিপূর্ণভাবে পালন করব। এখন কী সংস্কার হবে, না হবে আমরা সেটার সহযোগিতা করতে রাজি আছি। এটা হচ্ছে আগামী সংসদের কাজ। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের কাজ। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, যেভাবে বিগত দিনে নিয়েছে। বিগত দিনের রাজনীতিবিদরা যেহেতু সফল হয়নি, তারজন্য রাজনীতিবিদরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। রাজনীতিবিদরা তার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আগামী দিনের রাজনৈতিক পথ সঠিকভাবে চালাবে। সেটাই গণতন্ত্র, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিমুদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং।
সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এক বিশাল বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের হয়ে নগরের দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, কাজির দেউড়ি মোড় হয়ে নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় মঞ্চে এসে শেষ হয়।
আরটিভি/এমকে/এআর
মন্তব্য করুন