উলিপুরে যুবদল নেতা নিহত, প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিপক্ষ গ্রুপের ঘুষিতে পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম (৩৮) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উলিপুর থানা চত্বরে এক সালিশ বৈঠকে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিনি মারা যান।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জিল্লুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষে আশরাফুল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলে তার সঙ্গীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে মর্গে প্রেরণ করেন। নিহত আশরাফুল উলিপুর পৌরসভার কাজীর চক এলাকার আয়নাল হক ওরফে ডিস আয়নালের একমাত্র ছেলে এবং জেলা বিএনপির সদস্য তাসভীর উল ইসলামের অনুসারী।
এ দিকে আশরাফুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের শুভেচ্ছা হোটেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়াও রাত ৯টার দিকে অপর নেতা আব্দুল খালেকের অনুসারী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর সোহেল রানার উলিপুর মধ্য বাজারস্থ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ২টি গরুসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ফিরোজ কবীর কাজলের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। উভয় পক্ষ সংঘর্ষ ও ভাঙচুর করে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর উলিপুর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের মধ্যে খালেক গ্রুপ ও তাসভীর গ্রুপ নামে উপদলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নেয়। ফলে কেউ কেউ আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এ দিকে ২৭ ডিসেম্বর রাতেই ফিরোজ কবীর কাজলকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে নিহতের বাবা আয়নাল হক একটি হত্যা মামলা দায়ের থানায় করেছেন। শনিবার ময়নাতদন্তের পর জানাজা শেষে কাজীরচক কবরস্থানে নিহতের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন