আকিজ কারখানায় নিহতদের বাড়িতে চলছে মাতম
হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩ শ্রমিকের চাঁদপুরের বাড়িতে চলছে মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার।
নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগ্নে মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ।
হবিগঞ্জের বাহু বলে আকিজ ডেঞ্জারের কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের ওপরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছে তার আরও দুই নিকটাত্মীয়। তারা হলেন মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ। এছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি।
আকিজ ভেঞ্জারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা। কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে।
নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, একই পরিবারের তিন জন মারা গেছে। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। ইব্রাহীম কাকা দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছে। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেয়। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুন হয়ে যাবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। উপজেলার পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন