• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১
logo

মেহেরপুরে যুবদল নেতা হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

মেহেরপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:০২
মেহেরপুরে যুবদল নেতা হত্যা, গ্রেপ্তার ৩
ছবি : আরটিভি

মেহেরপুরের গাংনীতে চাঞ্চল্যকর ওয়ার্ড যুবদল নেতা হত্যার ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয় বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-গাংনী পৌরসভা চৌগাছা গ্রামের রইচ উদ্দীনের ছেলে ঘড়ি ব্যবসায়ী মো. রবিউল ইসলাম ওরফে বিপ্লব (৩৬), গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে মফিকুল ইসলাম (৩৯) ও কোদাইলকাটি গ্রামের জামাত আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০)।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে গাংনী থানা মোড় এলাকার সিদ্দিক ওয়াস দোকানের সামনে থেকে বিপ্লব হোসেনকে গাংনী কাঁচাবাজার এলাকা থেকে রাত ৯টার দিকে মফিকুল ইসলামকে এবং রাত ১০টার দিকে আলমগীর হোসেনকে কোদাইলকাটি গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এ বিষয়ে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২) সিপিসি-৩, মেহেরপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফউল্লাহ বলেন, ‘পাওনা টাকাকে কেন্দ্রকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গাংনী পৌর যুবদলের ওয়ার্ড সভাপতি (বাঁশবাড়িয়া) আলমগীর হোসেনকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে বলে তারা স্বীকার করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডে ৫ জন অংশ নিয়েছে তারা।’

র‌্যাব কমান্ডার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতকরা জানিয়েছে, আলমগীর হোসেনের কাছে একই এলাকার আসামি মো. মফিকুল ইসলামের ২ লাখ টাকা পাওনা ছিল। প্রায় ৪ বছর আগে আলমগীর হোসেন ঘাতক মফিকুলের কাছ থেকে এ টাকা ধার নেন। পরে মো. আলমগীর হোসেন প্রায় দেড় বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (দুবাই) চলে যান। প্রায় ২ মাস আগে আলমগীর দেশে ফেরত আসেন। তিনি বাড়ি ফিরে আসার পর মফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে পাওনা টাকার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি টাকা না দিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা শুরু করেন।’

তিনি বলেন, ‘তাদের টাকা লেনদেনের বিষয়টি শুরু থেকেই আসামি মফিকুল তার বন্ধু অপর ঘাতক বিপ্লব জানতেন। আসামি বিপ্লব হোসেন ও আসামি আলমগীর একাধিকবার ভিকটিমের কাছ থেকে মফিকুলের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তিনদিন আগে মফিকুলের সঙ্গে আলমগীর হোসেনের টাকা দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। আর তখন থেকেই আসামিরা ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দুদিন আগে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে (পরকীয়া) আসামি বিপ্লব তার ঘড়ির দোকানে বসে নিজ হাতে একটি চিরকুট লেখে। যা আলমগীর হোসেনকে হত্যার পর মরদেহের কাছে সেই চিরকুটটি রেখে আসে আসামিরা।’

র‌্যাব কমান্ডার বলেন, ‘গত ১ জানুয়ারি ঘটনার দিন বিকেলে আসামি বিপ্লবের দোকানে ভিকটিম আলমগীর হোসেন যায় এবং তার সঙ্গে আড্ডা দেয়। কয়েকদিন আগে যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন ঘাতক বিপ্লবের কাছ থেকেও টাকা ধার চেয়েছিলেন। বিপ্লব হোসেন ভিকটিমকে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে গত ১ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে (আনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে) নিজ বাসায় নিয়ে যান। পরে অপর আসামি মফিকুল ইসলাম তার মোটরসাইকেলে চড়ে অপর আসামি বিপ্লব হোসেন ও ভিকটিম আলমগীর হোসেন গাংনী উপজেলার মড়কা বাজারে যায়। সেখানেই অবস্থান করছিল আসামি আলমগীর ও তার অন্যান্য সঙ্গীরা। পরে আলাদা একটি মোটরসাইকেলে করে ভিকটিমসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলে যায়।’

র‌্যাব কমান্ডার আরও বলেন, সেখানে আসামিরা মফিকুলের কাছ থেকে নেওয়া ধারের টাকা কেন ফেরত দিচ্ছে না এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরে আসামি আলমগীর হোসেন দা দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করে এবং সবাই মিলে ভিকটিমের মুখ ও হাত পা বেঁধে ফেলে। পরে পাঁচজন মিলে আলমগীর হোসেনকে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। ফেরার পথে ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার দূরে রাস্তার ঢালে হত্যার কাজে ব্যবহৃত দা ফেলে আসেন বলে আসামি বিপ্লব হোসেন স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার মঈন উদ্দীনের ছেলে ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আলমগীর হোসেনের (৩৮) গলাকাটা মরদেহ সহড়াবাড়িয়া ইছাখালি মাঠের পাশে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আরটিভি/এমকে/এআর

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিএনপি নেতাকে মারধর, যুবদল নেতা বহিষ্কার 
যুবদল কর্মী হত্যা, ডিবির সেই কনক কারাগারে
যুবদল কর্মী হত্যায় ডিবির সেই কনক গ্রেপ্তার
বিচারপতির কাছে চাঁদা দাবি, সেই যুবদল নেতা বহিষ্কার