শ্রীপুরে পোশাক শ্রমিককে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
গাজীপুরের শ্রীপুরে সহকর্মীকে মুক্ত করতে গিয়ে এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে শ্রীপুর থানায় করা মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাওরাইদ (মোড়লপাড়া) এলাকার সাগর (২৫), শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া দক্ষিণ খণ্ড এলাকার আশরাফুল ইসলাম (২৯) এবং নেত্রকোণা সদর উপজেলার হাটখোলা বাজার এলাকার মনিরুল ইসলাম নিরব (১৮) নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ও মামলার এজাহারে মোট ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল।
পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কর জানান, অভিযুক্তরা শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন। এক স্থানীয় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
এজাহারে জানা যায়, শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা এলাকার মাহমুদল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থাকেন ২৩ বছর বয়সী ওই নারী। তিনি স্থানীয় ইশরাক স্পিনিং মিলে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী জানান, ২৭ বছর বয়সী সহকর্মী নাজমুল হক তাকে ফোন করে জানায় যে, তার সঙ্গে কিছু সমস্যা হয়েছে এবং ফখরউদ্দিন কারখানার মোড়ে এসে তাকে সাহায্য করার জন্য বলে।
বিকেল ৩টায় ওই নারী সহকর্মীর ফোন পেয়ে ফখরউদ্দিন কারখানার মোড়ে গিয়ে সাগরের মুখোমুখি হন। সাগর পরিচয় জানার পর তাকে স্থানীয় নজরুল ইসলামের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে বাদী দেখতে পান, নাজমুলকে মারধর করছে অভিযুক্তরা। ওই নারী তাদের মারধর বন্ধ করতে বলে, কিন্তু সাগর ও আশরাফুল বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তারা ওই নারীকে ঘরে নিয়ে গিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
ঘটনার পর এক পর্যায়ে অজ্ঞাত তিনজন আসামি ঘরে ঢুকে ওই নারীকে আবারও পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর শুক্রবার সকালে মনিরুল ইসলাম নিরব ওই নারীকে একটি অটোরিকশা ভাড়া করে বাসায় ফিরিয়ে দেয়। পরে তিনি তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
নির্যাতনের শিকার পোশাক শ্রমিক নাজমুল হক বলেন, ‘৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় বেতনের টাকা তুলে বাসায় ফিরছিলাম। সহকর্মী ইয়াছিন আমাকে ফোন করে বলে ফখরুদ্দিন মোড়ে যেতে। ওই স্থানে গেলে ইয়াছিন ও তার সহযোগীরা আমাকে একটি বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করে দুই লাখ টাকা দাবি করে। আমার সঙ্গে থাকা বেতনের সাড়ে ১৪ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা। পরে আরও টাকার জন্য মারধর করলে আমি দুই ব্যক্তির কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আরো ৪ হাজার টাকা তাদেরকে এনে দেই।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ‘মামলা রুজুর পরই অভিযান চালিয়ে ৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে রোববার গাজীপুর আদালতে পাঠানো হবে।’
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন