টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে, প্রত্যাহার ৩ এসআই!
সম্প্রতি গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় নুরুল ইসলাম নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি।
ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম কোনাবাড়ী হাউজিং এলাকার হোসেন আলী মুন্সীর ছেলে। কোনাবাড়ী বাজার এলাকায় তার ওষুধের দোকান রয়েছে।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে ব্যবসায়ীর নূরুল ইসলামের (৪৫) অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কোনাবাড়ীতে ওষুধের দোকান থেকে তাকে উঠিয়ে থানায় নেওয়া হয়। পরে ৫ লাখ টাকা থেকে দেন-দরবারর করে ২ লাখ টাকায় বিষয়টি সুরাহা হয় বলে অভিযোগ করেন নুরুল ইসলাম। তবে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে নিয়ে ২ লাখ টাকা নিলেও তারপরও তাকে ছেড়ে না দিয়ে মেট্রোপলিটন অধ্যাদেশ আইনে পরদিন ৪ জানুয়ারি সকালে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত জামিন দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, গত ১১ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে নূরুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ওসি নজরুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওসির তত্ত্বাবধানে ৫ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন ওসি নজরুল ইসলাম। আরটিভিকে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এমনকি তিন এসআইকে কেন প্রত্যাহার করা হয়েছে তাও তিনি জানেন না বলে জানান।
জানা যায়, ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে টাকা নেওয়ার খবর পত্রিকায় প্রকাশ হলে ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে গত রোববার রাতে কোনাবাড়ী থানার তিন এসআইকে প্রত্যাহার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে জিএমপি।
প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন—কোনাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উৎপল সাহা, উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদ মাহমুদ ও উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাশেম।
তবে এ ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরও রহস্যজনকভাবে তিন এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সদস্যরা। অর্থ লেনদেনে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই প্রত্যাহার করায় হতবাক তারা। ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তাকে বাদ দিয়ে তিন এসআইকে প্রত্যাহার কেন করা হয়েছে তার উত্তর তারা কেউই জানেন না!
এ ব্যাপারে এসআই আবুল কাশেম জানান, তিনি নুরুল ইসলামকে আটকের পর অর্থ নিয়ে লেনদেনের বিষয়ে কিছুই জানেন না। বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয় ওসির বিরুদ্ধে কিন্তু রহস্যজনকভাবে তাদেরকে প্রত্যাহার করায় হতবাক হয়েছেন। তাদেরকে প্রত্যাহার অযৌক্তিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বিষয়টির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ওষুধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তার ভাষ্য, তিন এসআই তাকে বা তার পরিবারকে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েও কোনো হুমকি-ধমকি দেননি। তাদের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের বিষয়েও কোনো কথা হয় নি। তবে পত্রিকার রিপোর্টগুলোতে রস মিশিয়ে বিষয়টিতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের নাম যোগ করা হয়েছে। প্রত্যাহারকৃত তিন এসআইয়ের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি যা বলেননি তাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও দাবি তার।
আরটিভি/এএএ-টি
মন্তব্য করুন