নির্বাচনের তারিখটা এই মুহূর্তে ইসির হাতে নেই: মো. সানাউল্লাহ
জাতীয় নির্বাচনের তারিখটা এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তবে, চলতি বছরের ডিসেম্বরকে লক্ষ্যে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৬ সালের জুনের মাঝে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা প্রথম তারিখটাকে ধরে নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তারপরও রাজনৈতিক মতৈক্য যেখানে দাঁড়াবে, আমরা সেই মোতাবেক কাজ করব। নির্বাচনের তারিখটা এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই। এখন একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতি চলছে। এখানে রাজনৈতিক ঐক্যের বিষয় রয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ করব।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরকে লক্ষ্যে রেখেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাইকরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।
এ সময় ভুয়া ভোটার তালিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, সাধারণত তিন ধরনের ভোটার আমাদের কাছে বেশি বিবেচ্য। প্রথমটি হচ্ছে মৃত ব্যক্তি যাদের নাম এখনও বাদ যায়নি, তাদের নাম বাদ না দেওয়া। দ্বিতীয়টি হলো যারা বাংলাদেশের নাগরিক নন, প্রতারণার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার চেষ্টা করেন। আর তৃতীয় হচ্ছে যদি কোনো কারণে দ্বৈত এনআইডি থাকে, যদিও বা এর সম্ভাবনা কম। এর বাইরেও বয়স হয়নি ভোটার হয়েছে। আমরা এই কারণেই এবার বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হবে। এই তালিকা ছাড়াও হালনাগাদ ও যাচাইকরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
তিনি বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত যেসব সন্দেহ আছে, সেগুলো দূর করার চেষ্টা করবো। জুন মাসের শেষ নাগাদ আমরা এই কার্যক্রম শেষ করতে পারব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহের অবকাশ আছে। যাচাইকরণের ফলে রিফাইন্ড তালিকা এসে যাবে, ফলে যারা বাদ পড়েছেন তারা সন্নিবেশিত হবেন।
এর আগে, মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের ভোটার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা আবশ্যক। সেইসঙ্গে ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহ দিতে হবে। নারীরা যেন তাদের বিভিন্ন নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য নারীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বিশেষ নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে ভোটার হওয়ার গুরুত্বের দিকটি সবাইকে জানাতে হবে।
ভোটার তালিকা করা এবং এর সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ব্যক্তি যাতে নিয়ম অনুযায়ী ভোট প্রদান করতে পারে, সেজন্য সঠিক ভোটার তালিকা করা আপনার আমার সকলের কর্তব্য। কারণ একটি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হতে পারে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
আরটিভি/এসএইচএম
মন্তব্য করুন