দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা রাথুরা গ্রামে চারদিন আগে গলা কেটে এক নারীকে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় অসুস্থ স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে স্বামী সেকেন্দার আলী (৬৬)। তিনি মানিকগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারা মতে দায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দী দিয়েছেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন।
তিনি বলেন, ঘিওর উপজেলার রাথুরা গ্রামে সেকেন্দার আলী ও লায়লা আরজু দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ের বিয়ে হওয়ায় তারা অন্যত্র বসবাস করেন। বাড়িতে সেকেন্দার আলী ও তার স্ত্রী লায়লা আরজু থাকতেন। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে দ্বিতীয় তলাবিশিষ্ট বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে গলা কাটা অবস্থায় লায়লা আরজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ১৬ জানুয়ারি নিহতের ভাই ময়নুল ইসলাম মুকুল বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে দেখা যায় ঘটনার সঙ্গে নিহতের স্বামী সেকেন্দার আলী সরাসারি যুক্ত। তাকে শুক্রবার রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেকেন্দার আলী স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার ও কারণ জানান।
সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ডায়াবেটিস, হাই প্রেসার, থাইরয়েড ও ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং তার জরায়ু অপসারণ করা হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে তিনি মারাত্মক অসুস্থ। এই কারণে তারা আলাদা কক্ষে রাত্রি যাপন করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না থাকায় সেকেন্দার আলী দ্বিতীয় বিয়ে করবে বলে জানান। তবে দ্বিতীয় বিয়েতে তার স্ত্রী বাধা দেন। এ নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয় নিয়ে ১৫ জানুয়ারি সকাল পৌনে ৬টার দিকে আবারও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার স্ত্রী লায়লা কক্ষের মেঝেতে পড়ে গেলে তিনি রান্না ঘর থেকে ফল কাটার ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলায় আঘাত করেন। স্ত্রীর গলা দিয়ে রক্ত বের হলে তিনি একটি ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের দিকে চলে যায়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়িতে এসে সেকেন্দার আলী আর্তচিৎকার করে বলে তার স্ত্রীকে কে বা কারা গলা কেটে হত্যা করেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলা হওয়ার পর মাত্র দুই দিনের মধ্যে আলোচিত এই হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় দায়স্বীকারোক্তি করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
আরটিভি/এফএ
মন্তব্য করুন