চুয়াডাঙ্গায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে
চুয়াডাঙ্গায় আবারও কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। মাঘের শীতে জবুথবু এখানকার জনজীবন। ঘন কুয়াশা ও উত্তরের হিম বাতাসে বেড়েছে দুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগে খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। এরমধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। তীব্র শীতে নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা। ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, রোববার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতকরা ৯৩ ভাগ।
আরটিভি/এএএ/এআর
মন্তব্য করুন
নথিপত্র গায়েব হচ্ছে সন্দেহে তুলকালাম কাণ্ড, দুইটি ট্রাক আটক
দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন দিয়ে নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার গুঞ্জনের মধ্যে বরিশালে পুরোনো ফাইল গায়েব হচ্ছে সন্দেহে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এ সময় কাগজ ভর্তি দুটি ট্রাক আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে ট্রাক দুটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম ও কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, সম্প্রতি সচিবালয়ে আগুন দিয়ে নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার সন্দেহের মধ্যে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজারে পুরোনো নথিপত্র বহনকারী দুটি ট্রাক আটকে পুলিশে খবর দেয় জনতা। পুলিশ এসে সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানকে বিষয়টি জানায়। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সবাইকে জানান, এগুলো বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের পুরোনো কাগজ এবং আসবাবপত্র। পুড়িয়ে ফেলার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হওয়ার পর ট্রাক দুটি ছেড়ে দেন স্থানীয় জনতা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক যুগের পুরোনো দাফতরিক নথিপত্রগুলোর কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে বিধায় পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর ভাড়া করা দুটি ট্রাকে এসব নথিপত্র ও আসবাবপত্র ভর্তি করে তা নগরের ময়লা খোলার ভাগাড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলার জন্য অফিসের দুই কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে অফিসের দুই কর্মকর্তার কেউ বরিশালের ময়লার ভাগাড় চেনেন না। অফিস কর্মচারী এবং ট্রাক চালক নিজেদের সিদ্ধান্তে সেগুলো কাগাশুরা এলাকার বাজারের পেছনে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা, এসব কাগজ না পুড়িয়ে বাজারে বিক্রি করতে চেয়েছেন দুই কর্মকর্তা। এ সময় এক বান্ডিল কাগজ ট্রাক থেকে রাস্তায় পড়ে গেলে স্থানীয় জনতা তা তুলে দেখে এবং সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে ট্রাক দুটি আটকে দেয়। কিন্তু সত্য হলো- সেগুলো আমাদের অফিসের পুরোনো নথিপত্র। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের খবর দিলে আমরা এসে বিষয়টি বুঝিয়ে বললে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ সেগুলো ফেরত দিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন, সদর উপজেলার কাগাশুরা গ্রামে দুটি ট্রাক ভর্তি কাগজপত্র আটক করেছে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সবার উপস্থিতিতে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা লিখিত দিয়ে তাদের কাগজপত্র বুঝে নিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।
আরটিভি কেএইচ
স্ত্রী বাড়ি নেই, গভীর রাতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা ২ কৃষি কর্মকর্তা
বরিশালের গৌর নদীতে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় দুই কৃষি কর্মকর্তাকে হাতেনাতে আটক করেছেন স্থানীয়রা। এ সময় কৌশলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপঙ্কর বাড়ৈ পালিয়ে গেলেও বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নেন নারী কর্মকর্তা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) উপজেলার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নারী কৃষি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসে একই পদে চাকরি করার সুবাদে দীপঙ্কর বাড়ৈয়ের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গার নিয়ে দীপঙ্কর আমার সঙ্গে মেলামেশা করে। তার (দীপঙ্কর) স্ত্রী বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় সুবাদে বাসা খালি থাকার সুযোগে বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে তার বাসায় আসতে বলে। আমি রাত ৪টার দিকে দীপঙ্করের ভাড়া বাসায় আসি। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে আমাদের ২ জনকে হাতেনাতে আটক করে। আমাকে তার বাসায় ফেলে দীপঙ্কর পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর বিয়ের দাবিতে আমি দীপঙ্করের বাসায় এখন অনশন শুরু করেছি।
বাড়ির মালিক সাগর গোমেজ বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় ভাড়াটিয়া দীপঙ্করকে এক নারীসহ আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় দীপঙ্কর পালিয়ে যায়। তখন ওই নারী বিয়ের দাবিতে বাসার ভেতরে অবস্থান নেন। তবে বিকেলে তিনিও বাসা থেকে চলে যান।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপঙ্কর বাড়ৈ অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, এর কোনো সত্যতা নেই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/এএএ
আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজের অভিযোগে ২ তরুণী আটক
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলীর একটি আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দুই তরুণীকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমার হোটেল সাগর রেস্ট হাউজের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের আটক করা হয়।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমা এলাকায় হোটেল সাগর রেস্ট হাউজের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় দুই তরুণীকে আটক করতে সক্ষম হয়। তারা ওই হোটেলে অসামাজিক কাজে জড়িত ছিল। আটককৃতদের সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আদালতে প্রেরণ করা হবে।
আরটিভি/একে
যশোরে আজহারীর মাহফিল ঘিরে ৩ শতাধিক জিডি
যশোরে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণলংকার ও বিভিন্ন জিনিস হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ঘটনার পর থেকে থানায় ভুক্তভোগীরা জিডি করতে রীতিমতো লাইন ধরেছেন। প্রায় ৩০০ জিডি হয়েছে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায়।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় বিকেল পর্যন্ত তিন শতাধিক জিডি হয়েছে। সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শহরতলী পুলেরহাট আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশ এলাকায় মাহফিলে গিয়ে মুসল্লিরা তাদের জিনিসপত্র হারিয়েছেন। মাহফিলের ভিড়ের মধ্যে পদদলিত ও ধাক্কাধাক্কিতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিন শুক্রবার রাতে বক্তব্য দেন জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তার আসার খবরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে সমগ্র মাহফিল এলাকায়। সকালে থেকেই শীত উপেক্ষা করে মানুষ জামায়েত হয়। বিকেল থেকে মাহফিল স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ঢল নামে। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়। এজন্য অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মিশে পুলেরহাটে। মাহফিল প্রাঙ্গনে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় উক্ত মাহফিলে বক্তব্য দেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বর্ণলংকার ও মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩০০ জিডি হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে অসংখ্যা মানুষ মোবাইল হারিয়ে যাওয়া বা চুরির ঘটনায় জিডি করতে আসেন। তাৎক্ষণিক যারা মোবাইলের ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছেন তারা জিডি করতে পেরেছেন। শনিবার সকাল থেকে রীতিমতো ভিড় লেগেছে। জিডির সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন দিনব্যাপী বৃহৎ মাহফিল হয়েছে যশোরে। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর ভেতরে অসংখ্যা মানুষের মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। অনেকেই জিডি করেছেন। কয়েকটি চুরির অভিযোগও পেয়েছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আরটিভি/এমএ/এআর
বেতনের টাকা কাটছিল ঋণদান প্রতিষ্ঠান, কর্মীর আত্মহত্যা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে (৩৮) নামে বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, ঋণের কিস্তি আদায়ে প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ প্রয়োগ ও বেতনের টাকা কেটে নেওয়ায় হতাশ হয়ে শুক্লা দে আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বোয়ালখালী থানায় করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় শুক্লার স্বামী সিদুল পাল রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায়ের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথসহ (৪৫) চারজনকে আসামি করেন। অন্য তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নন্দন (৪০), চিনু বিশ্বাস (৪২) ও পলাশ নাথ (৪৩)।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম।
নিহত শুক্লা দে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত শুক্লা এক ছেলে ও এক মেয়ের মা।
শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এজাহারে অভিযোগ করেন, সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন শুক্লা। সংস্থাটি এলাকায় মানুষজনকে ক্ষুদ্রঋণ দেয়। এসব ঋণ কিস্তি আকারে আদায় করতেন তিনি। ৫ আগস্টের পর থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি ছিল। কিস্তি আদায়ের জন্য গেলে শুক্লাকে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হতো।
এজাহারে আরও বলা হয়, সংস্থার ম্যানেজার কাঞ্চনসহ অন্যরা কিস্তি আদায়ে শুক্লাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। এরপর সংস্থাটি শুক্লার মাসিক বেতন থেকে অনাদায়ি কিস্তির টাকা কেটে নিচ্ছিল। এ ছাড়া নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল। কাজের চাপ সইতে না পেরে শনিবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরের বিমের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, গত নভেম্বর মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে শুক্লাকে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করে শুক্লাকে। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথকে কল করেও পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এমকে
পূর্বাচলে পড়ে থাকা গলাকাটা তরুণীর পরিচয় মিলেছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল থেকে এক তরুণীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ৫ নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো এলাকা থেকে রূপগঞ্জ থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম।
তিনি বলেন, ওই তরুণীর নাম রানী (২৯)। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের মো. কাশেমের মেয়ে।
পুলিশ সুপার বলেন, সোমবার সকাল ৮টার দিকে পূর্বাচল উপশহরের ৫ নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অজ্ঞাত এক তরুণীর গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তাদের একজন পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, গত রাতে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থলেই তাকে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ফেলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নিয়ে তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হয়। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা থানায় আসছেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা হবে। দ্রুতই আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারবো বলে আশা করছি।
আরটিভি/এমকে/এআর
চার খাটিয়া রাখা উঠানে, লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা
সাভারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স ও দুইটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) মরদেহের জন্য বাড়ির উঠানে রাখা আছে চার খাটিয়া। স্বজনরা অপেক্ষায় আছেন লাশ আসবে কখন। একই পরিবারের চারজনকে হারিয়ে নিহতের স্বজনরা হতবাক। এদিকে বাড়ির ছোট ছেলে ফাহিম সিদ্দিকী (১১) এখনও জানে না তার বাবা, মা, বড় ভাই এবং খালা আর বেঁচে নেই।
নিহতেরা হলেন- ভবন দত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএইচ ফারুক সিদ্দিকী, তার স্ত্রী মহসিনা খন্দকার, ছেলে মহায়মিন সিদ্দিকী ফুয়াদ ও স্ত্রীর বড় বোন সীমা খন্দকার।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী কিছুদিন থেকে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। চিকিৎসার জন্য গত রাতে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকীসহ পরিবারের চার সদস্য অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গত রাত তিনটার দিকে সাভারে বাসের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষ হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা একই পরিবারের চারজন নিহত হয়।
ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান তালুকদার বলেন, লাশ এখনো ঢাকায় রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিহত ফারুখ হোসেন সিদ্দিকীর ছোটভাই মামুন সিদ্দিকী বলেন, তারা তিন ভাই এক বোন। বোন সবার বড়। ইতালি প্রবাসী। বড়ভাই ফারুখ সিদ্দিকী ভবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী স্থানীয় ভবনদত্ত গণ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। হঠাৎ করেই কিছুদিন থেকে সে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। তবে থ্যালাসেমিয়া নয়। ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য গত রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা থেকে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী ও তার বোনকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন ফারুখ সিদ্দিকী।
মামুন সিদ্দিকী জানান, রাতে তার কাছে ফোন করে সবাইকে দোয়া করতে বলেন। এরপর আর কোন কথা হয়নি।
ফারুখ সিদ্দিকীর সহকর্মী মো. রুবেল মিঞা বলেন, প্রধান শিক্ষক খুব নীতিবান ছিলেন। একজন নীতিবান মানুষের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা সবাই চলে এসেছি। এমন শিক্ষক আর হবে না। আমাদের সবসময় আগলে রাখতেন।
নিহত ফারুখ সিদ্দিকীর আরেক সহকর্মী তার চাচাতো বোন সোমা সিদ্দিকা বলেন, স্যারের ছোট ফাহিম সিদ্দিকী (১১) হোস্টেলে থেকে মাদরাসায় পড়ে। সে এখনো জানে না তার বাবা মা আর ভাই পৃথিবীতে নেই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হেপলু জানান, রাতে তিনি ফারুখ সিদ্দিকীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে বাড়ি আসেন। একসঙ্গে চা পান করেছেন। ফারুখ সিদ্দিকীর মতো ভালো মানুষ আর হবে না।
আরটিভি/এএএ/এস