নোম্যান্স ল্যান্ডে বাড়ি নির্মাণে বিএসএফের আপত্তি, কাজ বন্ধ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের অভিযোগে নোম্যান্স ল্যান্ডে বাংলাদেশি নাগরিকের বাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকার আন্তর্জাতিক মেইন সীমানা পিলার নং ৯৪৬-এর সাব পিলার ২ এস এর পাশে। নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া বাড়ির মালিকের নাম আব্দুল মালেক।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে অনন্তপুর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মালেক পৈতিক সূত্রে পাওয়া সীমান্তের ৭০ গজের ভেতরে ৫ শতক জমির ওপর স্ত্রীসহ ছেলে দুলাল ও মিলনকে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে খড়ের ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন তিনি। অনেক কষ্টে কিছু টাকা পয়সা রোজগার করে ওই ভিটায় একটি টিনশেডের পাঁকা ঘরের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে ৩টি কক্ষের ইটের গাথুনীর কাজ শেষের দিকে।
খবর পেয়ে গত ২১ জানুয়ারি ভারতীয় বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবিকে জানায় বিষয়টি। বিকেলে ভারতীয় ১৩৮ ব্যাটালিয়নের অধীন ঝিকরী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) সদস্যদের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পাঁকা ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন। দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ওই পরিবারটিকে জানান, নোম্যান্স ল্যান্ডে কোন ধরনের পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
আব্দুল মালেকের ছেলে গার্মেন্টস কর্মি দুলাল মিয়া জানান, আমাদের বাড়ি করার মতো আর কোন জমি নেই। কিংবা অন্যত্র জমি কিনে বাড়ি করার মতো আমাদের সামর্থও নেই। অনেক কষ্টে রোজগারের টাকা দিয়ে একটি টিনশেড পাঁকা ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত বিএসএফের বাধাঁয় ঘর নির্মাণ করতে পারছি না। এই তীব্র শীতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কষ্টে ঝুপরি ঘরের মধ্যে বসবাস করছি।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করায় বিএসএফ ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। বিএসএফ বাঁধা দেওয়ায় আপাতত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে অনন্তপুর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম বলেন, বিএসএফের অভিযোগে এবং সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭০ গজের ভেতর নির্মাণ কাজ হওয়ায় এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকও করেছি।
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন