• ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১
logo

জমি নিয়ে বিরোধ, খেতে ধান থাকলেও দেওয়া হয় লুটের মামলা!

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৫২
ছবি : আরটিভি

খেতের ধান খেতেই পড়ে আছে। এখনো কাটা হয়নি। কিন্তু সেই ধান লুট করে নেওয়া হয়েছে বলে দেওয়া হয় লুটের মামলা। এই ঘটনায় মালিকের মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ আরও কিছু অভিযোগ তুলে ধরা হয় মামলায়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা এই মামলা তদন্ত করতে সরজমিনে গিয়ে এই ঘটনার কোন অস্তিত্বও পায়নি পুলিশ কর্মকর্তা। এরপরও ঘটনা সত্য বলে দেওয়া হয় প্রতিবেদন। আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন। এতে মিথ্যা এই মামলায় জড়িয়ে হয়রানি হচ্ছে নোয়াখালী হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নরে পশ্চিম বড়দেইল গ্রামের একটি পরিবার।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

এতে লিখিত বক্তব্যে মামলার দ্বিতীয় নং আসামি আজহার উদ্দিন বলেন, তাদের প্রতিবেশী বেলাল উদ্দিন নামে একজন গত ১৪ ডিসেম্বর হাতিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় তাকেসহ পরিবারের ৮ সদস্যকে আসামি করা হয়। মামলায় ঘটনা হিসাবে তাদের জমির পাশে বাদীর জমি থেকে ধান কেটে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বাধা দিলে বাদীকে সহ তার স্বজনদের পিটিয়ে আহত করার কথা বলা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই প্রভাত কর্মকার। তিনি ঘটনাস্থলে এসে এই ঘটনার কোন অস্তিত্ব খোঁজে পাননি। তিনি ধানখেতে গিয়ে লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা ধানগুলো খেতে দেখতে পান। এ ছাড়া তিনি প্রতিবেশীদের সাথে আলাপ করে ঘটনার সত্যতা পাননি। পরে তিনি ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দেবেন বলে আসামিদের আশ্বস্ত করেন।

কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর এস আই প্রভাত কর্মকার আসামি ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ঘটনা সত্য বলে আদালতে প্রতিবেদন দেন। মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ায় এস আই প্রভাত কর্মকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

এই বিষয়ে সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা খুঁজতে গিয়ে কথা হয় মামলার ৩নং সাক্ষী মো. সফিক ও ৪নং সাক্ষী আব্দুল হকের সাথে। বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন আব্দুল হক। পশ্চিম বড়দেইল গ্রামের মামুন মার্কেটের একটি দোকানে দেখা হয় তার সাথে। কথা বলার এক পর্যায়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে আদালতে দেওয়া তার জবানবন্দি পড়ে শুনালে এই বক্তব্য তার নয় বলে জানান তিনি। ধান লুটসহ এই ধরনের কোনো ঘটনা তিনি দেখেননি বলে জানান।

একইভাবে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে দেখা হয় মামলার সাক্ষী মো. সফিকের সঙ্গে। তাকেও জবানবন্দি পড়ে শুনালে তিনি এস আই প্রভাত কর্মকার তার সাথে কোন কথা বলেননি বলে জানান। এই জবানবন্দি এস আই নিজে মন গড়া লিখে দিয়েছেন বলে জানান সফিক।

ঘটনাস্থলের পাশে ছানাউল্যা মার্কেট। মার্কেটের চা দোকানের মালিক বেলাল জানান, যে মামলাটি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ধরেনর কোন ঘটনা ঘটেনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসেছিলেন। তিনি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু কিভাবে মিথ্যা এই ঘটনা সত্য বলে প্রতিবেদন দিল বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।

এই বিষয়ে মামলার বাদী বেলাল উদ্দিন জানান, আসামিদের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ অনেক দিন থেকে। একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। কিন্তু যে ঘটনায় মামলা করা হয়েছে তা ঘটেছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক উপপরিদর্শক ও বর্তমান এপিবিএন উত্তরায় কর্মরত প্রভাত কর্মকারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। এতে মামলার প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।

আরটিভি/এএএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হাতিয়ায় আগুনে পুড়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
হাতিয়ায় বিএনপির গণসমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, সমালোচনা
হাতিয়ায় বন্দোবস্ত দেওয়া ভূমি বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন
হাতিয়ায় বরই চাষে ভাগ্যবদল অনেকের