পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হালিম ফরাজীকে একটি ভিডিওতে দেখা যায় হাতে দা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন প্রতিবেশীকে মারধর করতে তেড়ে আসছেন। তার সঙ্গে লাঠি হাতে দুই ছেলেও রয়েছেন। ভুক্তভোগী ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গত ৯ মার্চ শনিবার সকালে লতাচাপলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খাজুরা (বাহামকান্দা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হালিম ফরাজী ও তার ২ ছেলে সজীব ও রায়হান স্থানীয় সজীব হাওলাদার নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। হালিম ফরাজী হাতে দা নিয়ে প্রতিবেশী মোস্তফা ফকির ও তার স্ত্রী রাশেদা বেগমসহ কয়েকজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। ঘটনাটি এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হালিম ফরাজী এর আগেও স্থানীয় মোস্তফা ফকিরের স্ত্রী রাশেদা বেগমের মাথায় আঘাত করেছিলেন। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
জানা যায়, হালিম ফরাজী ৫ আগস্টের পরে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় সালিশ বাণিজ্য জমি দখল চাঁদাবাজিসহ বিস্তার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত শনিবার প্রতিবেশী কালাম হাওলাদার ও মোস্তফা হাওলাদার নিকট চাঁদা চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কিছুক্ষণ পরে দা নিয়ে তাদের ধাওয়া করলে তারা নিজেদের রক্ষা করতে বসতঘরের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় উত্তেজিত হালিম ফরাজী ও তার ছেলেরা তাদের বসতঘরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়েছন।
এ বিষয়ে মোস্তফা ফকির বলেন, হালিম ফরাজী এর আগেও আমার স্ত্রীকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। হালিম ফরাজীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। প্রশাসনের কাছে আমরা তার বিচার চাই।
ভুক্তোভোগী আবুল কালাম হাওলাদার স্ত্রীর তাসলিমা বেগম বলেন, হালিম ফরাজীর নির্যাতনের জন্য আমার পরিবার দিশেহারা। সে বিভিন্ন সময় আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। গত ৯ মার্চ সকালে তিনি ‘দা’ নিয়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্য তেড়ে আসেন। একপর্যায়ে আমার ছেলে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করলে তিনি হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হালিম ফরাজী বলেন, ওখানে আমার জমি রয়েছে। আমি মূলত সেই জমিতে থাকা আগাছা পরিষ্কারের জন্য দা নিয়ে গেছি।
লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ হাওলাদার বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরটিভি/এমকে