মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন, হাসি নেই কৃষকের মুখে

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ০৮:৩১ এএম


মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন, হাসি নেই কৃষকের মুখে
খেতে মিষ্টি কুমড়ার ওপর বসে আছেন কৃষক। ছবি: আরটিভি

কিশোরগঞ্জের ইটনায় এবার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক চাষ ও বাম্পার ফলন হয়েছে। কম সার, কীটনাশক প্রয়োগে আশানুরূপ উৎপাদন হলেও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায়, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। পাইকার না আসায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া। কাঙ্ক্ষিত দাম ও সবজি সংরক্ষণে হাওরে হিমাগার নির্মাণের দাবি কৃষকদের।

বিজ্ঞাপন

ইটনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কয়েক বছর ধরে মিষ্টি কুমড়া আবাদ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে ২০৫ হেক্টর পতিত ও অনউর্বর জমিতে সুইট বল, ইউলোকার্ট, ওয়ান্ডার গোল্ড ও বারী মিষ্টি কুমড়া-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হলেও, কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় কুমড়া বিক্রি নিয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা।

5a3d824a-03cb-4171-b463-d09114914515

বিজ্ঞাপন

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার মৃগা, ধনপুর, বড়িবাড়ি, রায়টুটি, বাদলা ও এলেংজুরীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৭শতাধিক কৃষক ২০৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার আবাদের পরিমাণ ও উৎপাদন বেড়েছে। একর প্রতি ১৮-২০ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইটনায় পতিত ও অনুর্বর জমিতে কম খরচ ও কম পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায়, ধারদেনা করে সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। উৎপাদিত পণ্য যথাসময়ে বিক্রি ও ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের ঝুঁকিতে রয়েছেন এই কৃষকরা।

এলেংজুরী হাওরে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে পড়ে আছে পরিপক্ব মিষ্টি কুমড়া। সময় মতো না ওঠানোর কারণে পচতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে হাওরাঞ্চলের সবজি কিনতে গড়িমসি ও কম দাম দিচ্ছে। এতে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক পরিবারগুলো। এই ব্যাপারে কৃষি বিপণন বিভাগের সহায়তা চান তারা।

0ee53b12-2625-4495-b326-94dc1f2647f2

কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ২০ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে ১০ লাখ টাকা খরচ করেছি। উৎপাদনের হিসাবে ৫০-৬০ লাখ টাকা বিক্রির কথা। এখন বিক্রি হয়েছে ৫-৬ লাখ টাকা। লাভ না পুঁজি উঠাতে পারব কিনা সন্দেহ।

ছিলনি গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন বলেন, ৩০ একর জমি চাষ করছি, ফলন ভালে কিন্তু দাম পাচ্ছি না। পাইকার আসেনা। মিষ্টি কুমড়া জমিতে পচে নষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটর কারণে এই অবস্থা। 

ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ উজ্জ্বল সাহা বলেন, কম খরচে বেশি লাভের কারণে ইটনায় দিনদিন বাড়ছে মিষ্টি কুমড়া চাষ। চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হলে কাঙ্ক্ষিত দাম না থাকায় হতাশ কৃষকরা। এসব সবজি স্থানীয় হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারলে বাজারা সিন্ডিকেট ভেঙে পড়তো। লাভবান হতো কৃষক।

আরটিভি/এএএ/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission