ঢাকাশুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১

এক ভোল মাছ বিক্রি হলো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় 

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫ , ০১:২৫ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়ল ৩৪ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির একটি ভোল মাছ। মাছটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেন পাথরঘাটার মৎস্য পাইকার হানিফ মিয়া। 

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে দেশের বৃহত্তর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা (বিএফডিসি) আলম মিয়ার আড়তে মাছটি বিক্রি হয়। 

এর আগে, ২০ মার্চ পাথরঘাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের মালিকানাধীন এফবি সাইফ-২ ট্রলারের জালে মাছটি ধরা পড়ে। 

বিজ্ঞাপন

IMG_20250325_084901

এফবি সাইফ-২ ট্রলারের মাঝি জামাল বলেন, গত বৃহস্পতিবার ট্রলারে বাজার সদাই করে ১৫ জন স্টাফ নিয়ে মাছ শিকারের জন্য সাগরে যাই। সাগরে গিয়ে প্রথমে ২ থেকে ৩ দিন জাল ফেললে দু-একটি ছোট ও মাঝারি আকৃতির আমাছা মাছ পেলেও বড় আকৃতির কোনো মাছ জালে দেখা মেলেনি। সর্বশেষ রোববার পুনরায় আবার সাগরে জাল ফেললে জাল তুলতে গিয়ে দেখি বড় আকৃতির ৩৪ কেজি ওজনের এই ভোল মাছটি জালে বাধে। মাছটি পেয়ে আমিসহ আমার ট্রলারের স্টাফরা অনেক আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন, দেশে এখন অবৈধ ট্রলিং জালে সয়লাব। দেশে এই অবৈধ ট্রলিং জাল হওয়ার আগে এমন বড় আকৃতির মাছ জালে কুড়িতে কুড়িতে পেতাম কিন্তু এখন দেশে অবৈধ ট্রলিং জালে নির্বিচার ছোট ছোট পোনা মাছ মেরে ফেলার কারণে সাগরে বড় মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সরকার যদি অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করে দেয় তবে সামনের দিনে সাগরে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা যেমন বাড়বে তেমনি এ ধরনের বড় বড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়বে। 

বিজ্ঞাপন

IMG_20250325_083909

আড়তদার আলম মিয়া বলেন, ট্রলারটি ৫ দিন সাগরে অবস্থান করার পর আজ পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) আসে। এখানে আসার পর শিকারকৃত মাছ বিক্রি জন্য আমার আড়তের চটে উঠালে তার সঙ্গে সাড়ে ৩৪ কেজি ওজনের একটি ভাজা ভোল মাছ ওঠায়। ভাজা ভোল মাছটি আড়তের চটে উঠিয়ে বিক্রি জন্য হাঁকডাক দেই। পরে এখানের এক মৎস্য পাইকার মো. হানিফ ৩৪ কেজি ওজনের ভাজা ভোল মাছটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেয়। আর এই খবর পাথরঘাটায় ছড়িয়ে পড়লে মাছটি একনজর দেখতে এখনকার জনসাধারণ ভিড় করে। 

মৎস্য পাইকার মো. হানিফ মিয়া বলেন, আমি ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা মণ দরে মাছটি সাড়ে ৩ লাখ ৫০ টাকায় কিনেছি কারণ এটি চট্টগ্রাম চালান দিলে অনেক দাম পাওয়া যাবে।

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়ৎদার সমিতির সভাপতি সগীর মেম্বার বলেন, ভোল মাছ খুব একটা পাওয়া যায় না। এই মাছের ঔষধি গুণ থাকায় এর মূল্য এত বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলো এই মাছ কিনে নেয়।

IMG_20250325_084856

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এই ভোল মাছ সচরাচর পাওয়া যায় না। আর বিশেষ করে বিদেশে এই মাছের বালিশের চাহিদা অনেক বেশি। কারন বিদেশিরা বিভিন্ন জুস তৈরিতে এই ভোল মাছ ব্যবহার করেন। 

তিনি আরও বলেন, ভোল মাছ বিশেষ করে বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। যার কারণে এ মাছের দাম ও চাহিদা খুব বেশি। আর বিদেশে এ মাছের উপকরণ দিয়ে সার্জিক্যাল অপারেশনের সুতা, প্রসাধনী ও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মাছের চাহিদা ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সহ অনেক রাষ্ট্রেই রয়েছে। 

এ বিষয় পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম বলেন, এই ভোল মাছ বিদেশে ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তাই মাছটির চাহিদা ও দাম সব সময়ই বেশি থাকে। জেলেরা যদি সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন বন্ধ রাখে তবে সামনের দিনে এমন বড় মাছের সংখ্যা সাগরে বাড়তে থাকবে। 

আরটিভি/এমকে/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |