ময়মনসিংহে জুলাই বিপ্লবে শহীদ রিদওয়ান হোসেন সাগরের বাবার সামনে সাগরকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীনের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ময়মনসিংহের প্রথম শহীদ হন কলেজ শিক্ষার্থী রেদোয়ান হাসান সাগর। সাগরের ছোট বোন আফিয়া তাবাসুম সুপ্তির স্কুল সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য গত ৯ এপ্রিল আবেদন করেন। সেই আবেদনের খোঁজ নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কার্যালয়ে সাগরের বাবা গেলে তাকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অপেক্ষায় রাখেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষা অফিসার কাজ সম্পূর্ণ হতে কিছু দিন সময় লাগবে বলে তাকে ফিরিয়ে দেন।
এই বিষয়ে শহীদ রিদওয়ান হোসেন সাগরের বাবা আসাদুজ্জামন আসাদ জানান, জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনে আমার ছেলে নিহত হয়েছে। আমি আমার মেয়ের সার্টিফিকেট সংশোধনের কাজ নিয়ে এর আগেও এসেছিলাম। আজকে শিক্ষা অফিসারের সাথে দেখা করে কাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি জেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে সংশোধনের কাজটি রয়েছে এবং সময় লাগবে বলে জানান। তার কাছে জেলা শিক্ষা অফিসারের ফোন নাম্বার চাইলে ফোন নাম্বার নেই বলে জানান। পরে আমি চলে আসা মুহূর্তে শিক্ষা অফিসার কক্ষে উপস্থিত লোকজন আমার পরিচয় তার কাছে শুনতে চাইলে তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন তিনি নাকি কোথাকার কোন শহীদের বাবা। এমন কথার প্রতিবাদ করতে গেলে শিক্ষা অফিসার আমাকে অসম্মান জনক আচরণ করেন। তার এমন আচরণ আমাকে মর্মাহত করেছে।
ময়মনসিংহের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্য সচিব আলী হোসেন, তিনি বলেন সাগরের বাবা আমাকে ফোনে এ বিষয়ে জানিয়েছেন, একজন শহীদের বাবা পরিচয় দেওয়ার পরেও তাকে অজুহাত দেখিয়েছেন। কাজ না হলে চলে আসা মুহূর্তে ওই শিক্ষা অফিসারের কক্ষে উপস্থিত লোকজন তার পরিচয় জানতে তিনি ব্যাঙ্গ করে বলেন তিনি নাকি কোন শহীদের বাবা। আজকের যাদের রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট দূর হয়েছে আর তার বাবার সঙ্গে এমন আচরণ খুবই দুঃখ জনক।
এ ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, কাজের ব্যস্ততার জন্য উনার কাজটি করতে বিলম্ব হচ্ছে। ব্যাঙ্গ করে কথা বলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি এমন ঘটনার কিছুই জানি না।
তবে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার জানান, সাগরের বাবা আমার কাছে এসে কান্না জড়িত কণ্ঠে শিক্ষা অফিসারের অপমানের বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাৎক্ষণিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।
আরটিভি/এএএ-টি