ঢাকাবৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, নিখোঁজ অর্ধশত যুবক

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ , ০১:১২ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি।

স্বপ্ন ছোঁয়ার আশায় অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। দালালচক্রের সদস্যরা প্রথমে ইতালিতে উন্নত জীবনযাপনের লোভ দেখায়। নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে আগ্রহী যুবকদের লিবিয়ায় পাঠিয়ে তুলে দেওয়া হয় সংঘবদ্ধ মাফিয়াদের হাতে। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও পরিবারকে দেখিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। 

বিজ্ঞাপন

এমনকি পরিবার মুক্তিপণ দিতে রাজি না হলে অনেককে দিতে হয় জীবন। মাদারীপুরে অর্ধশতাধিক যুবককে ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে মাফিয়ার কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে দালাল আবুল কালাম মুন্সির বিরুদ্ধে। মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বেরিয়ে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিচ্ছেন তিনি। ভুক্তভোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে দিচ্ছে একাধিক মামলা। তবে জেলা পুলিশ বলছে দ্রুত দালালদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। 

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দক্ষিণ চরকামার কান্দির মাসুম মোল্লা। গত এক বছর আগে ভাগ্য বদলের আশায় ১৪ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার চুক্তি হয় দালাল আবুল কালাম মুন্সির সঙ্গে। লিবিয়ায় নিয়ে বিক্রি করে দেয় মাফিয়ার কাছে। পরে আরও ২০ লাখ টাকার জন্য মুখে গামছাবেঁধে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। বর্তমানের পরিবারের সঙ্গে নেই যোগাযোগ। বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে তা-ও জানে না পরিবারের লোকজন। 

বিজ্ঞাপন

একই গ্রামের সোহেল আহমেদ প্রায় ১৪ মাস আগে ইতালি যাওয়ার জন্য বাড়ি ছাড়েন। টাকার জন্য তাকেও করা হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। সোহেলকে জীবিত উদ্ধারের জন্য দালাল চক্রকে দিয়েছেন ৫১ লাখ টাকা।

এদিকে সোহাগ মোল্লা একই দালালের কাছে জিম্মি দশায় গুনতে হয়েছে ৪৫ লাখ টাকাও। কিন্তু তারও কোনো সন্ধান নেই। এদিকে সোহাগের দুই বছরের সন্তান জন্মের পর থেকেই বাবার ছবি দেখেই চলছে। কিন্তু বাবাকে আর দেখতে পাননি। দুই বছরের শিশুসহ পরিবারের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে গিয়ে অনিশ্চিত হয়ে গেল তার ভবিষ্যৎ।

শুধু মাসুম মুন্সি, সোহেল আহমেদ, আর সোহাগ মোল্লা নয়। অবৈধপথে ইতালি যাবার সময় লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে জিম্মি মাদারীপুরের চরকামার কান্দির এলাকার অর্ধশত যুবক। এই ঘটনায় দালাল আবুল কালাম মুন্সির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

বিজ্ঞাপন

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শেখ সাব্বির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, অভিযুক্ত দালালদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনেও চলছে তদন্ত। কাজ করছে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডিও। মানবপাচার মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষে শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে। এছাড়া বাদীপক্ষকে অন্য মামলা দিয়ে যদি হয়রানি করে তাহলে তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরটিভি/এএএ/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |