ঢাকাবুধবার, ১১ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ছেলেদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ, মায়েদের ‘নাকে খত’ দেয়ালেন বিএনপি নেতা

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৪ মে ২০২৫ , ০৮:২২ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে হাঁস ও কবুতর চুরির অভিযোগ তুলে ২ কিশোরকে প্রকাশ্যে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই দুই কিশোরের মায়েদের ‘নাকে খত’ দিয়ে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। বৃহস্পতিবার রাতে ইউনিয়নের ‘খালুর দোকান’ নামক স্থানে এক সালিশ বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। 

বিজ্ঞাপন

এতে নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলু।

রোববার (৪ মে) ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। 

বিজ্ঞাপন

ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেন দেলু লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এবং কিশোরদের দুই মাকে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইছেন। অন্য এক অংশে কিশোরদের লাঠি দিয়ে আঘাত করার দৃশ্যও দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ১০ দিন আগে স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি থেকে হাঁস ও কবুতর চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাকিব ও তার বন্ধু রিফাতকে সন্দেহ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে সালিশ ডাকা হয়। সেই সালিশ বৈঠকে দুই কিশোর ও তাদের মায়েদের ডেকে আনা হয়। স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতিতে কিশোরদের মারধর করা হয়। পরে তাদের মায়েদের বলা হয়, সন্তানদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারার দায়ে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে হবে।

সালিশের সভাপতি বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, আমি কাউকে মারিনি। অভিযুক্ত কিশোরদের মায়েরা আমাদের কাছে আবদার করেছিলেন- বিষয়টি যেন সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হয়। তারাই স্বেচ্ছায় নাকে খত দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী রাকিবের মা বলেন, আমার ছেলে যদি ভুল করে থাকে, তার বিচার হতে পারে। কিন্তু আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করা হবে, তা কল্পনাও করিনি।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী রিফাতের মা বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। শুধু একজন মা হওয়ার কারণে আমাকে এত বড় অপমান সহ্য করতে হলো।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ইতোমধ্যে দেলোয়ার হোসেনের বিএনপির সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় দপ্তরের নির্দেশে তিনি তদন্ত করছেন। সোমবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়ে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ফেনী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরীন কান্তা বলেন, নারীকে এভাবে হেনস্তা করার অধিকার কারও নেই। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে সেটিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

আরটিভি/এমকে/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |