রাবিতে ছাত্র ধর্মঘটে ‘ছাত্রলীগে’র হামলার অভিযোগ
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ছাত্র ধর্মঘট পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে বাস আটকিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ‘ছাত্রলীগ’ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির কেউ নন।
আবার পুরো ঘটনাটি প্রক্টরের নির্দেশেই ঘটেছে বলে দাবি করেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী।
২৩ জানুয়ারি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে ঢাবি উপাচার্যকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করলে ছাত্রলীগ গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৯ জানুয়ারি সারাদেশে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এরই অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে।
ছাত্র ফেডারেশন রাবি শাখার সভাপতি কিংশুক কিঞ্জল বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা জোহা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। এসময় আমরা কোনো বাস চলাচল করতে দেইনি। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে আমাদের একটি বাস ছেড়ে দিতে বলেন। এ নিয়ে প্রক্টরের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছিল। কথাবার্তার এক সময় প্রক্টর উত্তেজিত হয়ে বলেন, দেখি তোমরা কীভাবে বাস আটকাও।
এসময় পুলিশ বাঁশি বাজাতে বাজাতে আমাদের একটু সরিয়ে দিলে কাজলার দিকে একটি বাস চলে যায়। এসময় সাবেক ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন ও ফিরোজ আহমেদ এসে আমাদের ধাক্কা দিতে শুরু করে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৫
--------------------------------------------------------
এই হামলাকে নেক্কারজনক দাবি করে কিংশুক কিঞ্জল বলেন, তারা হামলা করার পরও পরিচয় দিচ্ছিল তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। কিন্তু পরিবহনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকার কথা নয়। আমাদের কথা চলছিল প্রশাসনের সঙ্গে। প্রক্টরের সঙ্গে, তারা কোথা থেকে এসে, কার নির্দেশে হামলা করল আমি বুঝলাম না।’
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, জোহা চত্বরে আমরা ছাত্রজোট শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। প্রক্টর আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসলে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করি যে, ধর্মঘটে কোনো গাড়ি চালানো যাবে না। একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। পুলিশের দিকে নির্দেশ করেন, আমরা যদি গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করি তবে আমাদের গ্রেপ্তার কিংবা আমাদের ওপর হামলা করা হবে। এর মধ্যে প্রত্যেকটা গাড়ি চালু করা হয়। তখন আমরা নেতাকর্মীরা সরাসরি গাড়ির সামনে অবস্থান নেই। হঠাৎ ছাত্রলীগের নামধারী দুজন এসে আমাদের অনেককে কিল-ঘুষি মারে।’ পুরো ঘটনাটি প্রক্টরের নির্দেশেই ঘটে বলে দাবি করেন দীলিপ রায়।
এদিকে ছাত্রলীগের এমন আচরণে বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এসময় তারা প্রশাসনের উপস্থিতিতে এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ছাত্রলীগের কেউ ওখানে ছিল না। একটা ছবি দেখলাম, ওখানে ছাত্রলীগের গত কমিটির দুই সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান ছাত্রলীগ কমিটির কেউ ওখানে উপস্থিত ছিলেন না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এখানে ছাত্রলীগ ছিল না। আমি সকাল থেকেই প্রশাসনের সামনে ছিলাম। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে বাস ছাড়তে বলেছি। আমাদের বাস ছেড়ে গেছে। শুধুমাত্র সকালের সিডিউলের কিছু বাস বন্ধ ছিল।
ধাক্কাধাক্কির বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, হয়তো এ রকম কিছু হতে পারে। তবে কে এটা করেছে তা বলতে পারব না।
আরও পড়ুন:
জেবি/এসএস
মন্তব্য করুন