জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়ার সাড়ে ৯ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য শাহাদাত হোসেন শাওন (১৪) নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) বেলা ১১টায় সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেনবাগ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
শাওনের বাবা বাছির আলম বলেন, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর আনন্দ মিছিলে একজন পুলিশ সদস্য শাওনকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি করে। প্রথমটির লক্ষ্য ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়টি হাতে এবং তৃতীয়টি তার মাথায় বিদ্ধ হয়। আমার ছেলে হাফেজ হবে। সে আমাকে সহযোগিতা করতো। আমার ছেলের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন অধরা থেকে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শাহাদাত হোসেন শাওন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের মো. বাছির আলম ও শামছুন নাহার বেগমের কনিষ্ঠ ছেলে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন—এমন খবরে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। বিকেল ৫টায় ওই মিছিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন শাহাদাত হোসেন শাওন। পরে তার মরদেহ নোয়াখালীর নিজ বাড়িতে আনা হয় এবং ময়নাতদন্ত ছাড়াই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, শাওন ঢাকার পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকার নূরে মদিনা আল আরাবিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। কোরআনে হাফেজ হওয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সে নাজেরা ক্লাসে অধ্যয়ন করছিল। তার বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে সোমবার বেলা ১১টায় সেনবাগ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ও সেনবাগ থানা পুলিশের সহযোগিতায় মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।
এ বিষয়ে সেনবাগ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, শাওনের বাবা বাছির আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে সাড়ে ৯ মাস পর মরদেহ তোলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরটিভি/এমকে/এআর