নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী সমাবেশে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী হামলায় ২৪ জন আহত হয়েছে। আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রথমে এই ঘটনায় চারজনকে হাসপাতালে আনা হলেও রাতে বিভিন্ন সময় অন্যরা এসে হাসপাতালে ভর্তি হন। আবার অনেকে সকালে এসে ভর্তি হন। দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে আসেননি বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তমরদ্দি ইউনিয়নের বলীর পুল এলাকার পশ্চিম পাশে দফায় দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত হলেন- মো. রাফুল (২০), মো. রাসেল (৩৮) মো. মেরাজ (৩০) আলাউদ্দিন জাহের(৩৫) নুরুল ইসলাম(৪৫), ফখরুল ইসলাম খোকন (৪৮), তারেক (২০) রুবেল (৩৫), মো. হানিফ (৪৭), নোমান (২০) মো. সাগর (১৮), আনোয়ার (১৯), স্বপ্না বেগম (২৬), ফেন্সি আক্তার (২৫),আবদুল মান্নান (৪৫), মো. এনায়েত হোসেন (৫১),মো. দিদার হোসেন (৫২),তারেক মামুন (২৯),ফাতেমা খাতুন (৫৫), মো. মামুন(৩৫), মো. সোহেল (৩২), মো. বাহার (৫৫), রোজিনা আক্তার (৩২), মো. মিরাজ উদ্দিন (৪৫)সহ ২৪ জন। গুরুতর আহত আলাউদ্দিন জাহের, মেহেরাজ ও নুরুল ইসলামকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবের রহমান শামীমের সহযোগিতায় ঢাকায় পাঠানো হয়।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার জন্য বলীর পুলের রাস্তার মাথায় ভিড় করছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তানভীর গ্রুপের কর্মীরা। কিন্তু উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের সমর্থক আলমগীরের নেতৃত্বে বিনা উস্কানিতে এসে হামলা শুরু করে। দফায় দফায় চলে এ হামলা এসময় তানভীর গ্রুপের ২৪ আহত হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এদের সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অনেকের ইটের আঘাতের মাথায় জখম রয়েছে।
এ দিকে সংঘর্ষে আলমগীর গ্রুপের ইউসুপ, শামীম, রাসেল, এরশাদ সহ ৪জন আহত হয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাস্তার মাথায় সবাই জড়ো হলে সেখানে খোকন ও সুমনের নেতৃত্বে আমার কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।
তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার বলেন, তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদপুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মী সমর্থকদের অনুষ্ঠানের আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়। এতে কর্মীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এতে আমার ২৪ কর্মী-সমর্থক আহত হয়।
তিনি আলমগীরের করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তার কর্মী সমর্থকরা কারো ওপর হামলা করেনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি পণ্ড করার জন্য এই হামলা করা হয়েছে।
এদিকে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবের রহমান শামীম সাংবাদিকদের বলেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
রাতে আহতদের দেখতে আসেন এনসিপি নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদ। তিনি বলেন এভাবে হামলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সুস্থ রাজনীতির ধারায় সবাইকে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে এম আজমল হুদা বলেন, এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।
আরটিভি/এএএ