নিউজিল্যান্ডে নিহত ৩ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত তিন বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার আবদুস সামাদ ও আবদুস সামাদের স্ত্রী সানজিদা আকতার। আবদুস সামাদ নিউজিল্যান্ডের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। নিহত অপরজন হলেন সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার চকগ্রামের ফরিদ উদ্দিনের স্ত্রী সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গালহাটা গ্রামের নুরুদ্দিনের মেয়ে হুসনে আরা পারভীন।
আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, ২০১৩ সাল থেকে সপরিবারে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের অ্যাগলি পার্কে বসবাস করে আসছেন আবদুস সামাদ। তিনি নিউজিল্যান্ডের লিংকন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ছিলেন।
এছাড়া ডিনস অ্যাভিনিউ এর আল নূর মসজিদের মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন ছেলের বাবা। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।
তার ভাই নাগেশ্বরী সরকারি কলেজের প্রভাষক সামসুদ্দিন ড. আব্দুস সামাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর সানজিদা আকতারের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের অনারারি কনসাল শফিকুর রহমান ভুইয়া।
স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হন হুসনে আরা
এদিকে আমাদের সিলেট প্রতিনিধি জানান, নিউজিল্যান্ডে মসজিদে বন্দুকধারীদের গুলির শব্দ শুনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ‘স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে’ নিহত হন সিলেটের হুসনে আরা পারভীন। পারভীনের ভাগ্নে মাহফুজ চৌধুরী নিউজিল্যান্ডের আত্মীয়-স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন, ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি মসজিদে নারীরা ও অন্যটিতে পুরুষরা নামাজ পড়েন।
খালা পারভীন তার পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্বামীকে নিয়ে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। স্বামীকে হুইল চেয়ারে পুরুষদের মসজিদে রেখে নিজে নারীদের মসজিদে যান। এর প্রায় ১৫ মিনিট পরে পুরুষদের মসজিদে গুলির শব্দ শুনে তিনি বের হন। এ সময় অস্ত্রধারীরা গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলে নিহত হন।
তবে তার স্বামী ফরিদউদ্দিন অক্ষত আছেন। তিনি তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে রয়েছেন বলে জানান মাহফুজ চৌধুরী।
শুক্রবার জুমার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর ও লিনউড মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত হন; আহত হন আরও ৪৮ জন।
তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন বাংলাদেশি রয়েছেন। গুলিবিদ্ধ আরও চার বাংলাদেশিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিউজিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিহত পারভীনের মরদেহ এখনও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে পারভীনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিউজিল্যান্ডে অবস্থানকারী তার স্বজনদের জানানো হয়েছে।
পারভীন-ফরিদ দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছে। ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। এর কয়েক বছর পর তারা নিউজিল্যান্ডে যান। ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে জানান মাহফুজ।
আরও পড়ুন :
জেবি/পি
মন্তব্য করুন