প্রেমিকের সামনেই প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় প্রেমিকের সামনেই প্রেমিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ধর্ষণের সময় পুরো ঘটনা ভিডিও করা হয় বলে জানা গেছে।
গত সোমবার উপজেলার বহেড়াতৈল রেঞ্জের আওতাধীন একটি বনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
মামলার সূত্রে ও স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেল সোমবার বিকেলে ওই কিশোরী তার প্রেমিকের সঙ্গে বসে গল্প করছিল। এ সময় ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘাটেশ্বরী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৭), তার বন্ধু আশরাফুল (২৬), জালাল উদ্দিন (২৫), নজরুল উসলাম (৩০) ও আফাজ উদ্দিন (২৩) মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে যান এবং তাদের ওপর নজরদারি করেন।
পরে তারা ওই দুজনকে হাত ও মুখ বেঁধে পাশের একটি বনে নিয়ে যান। তাদের বিবস্ত্র করে তাদের নানা আপত্তিকর দৃশ্যও মুঠোফোনে ধারণ করা হয়। পাশাপাশি একে অপরকে জড়িয়ে ধরতে বলেন তারা। এক পর্যায়ে তাদের শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাপ দেন অভিযুক্তরা। এতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের মারধর করা হয়।
জানা গেছে, ভুক্তোভোগী দুজনের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রেমিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে সাদ্দাম, আশরাফুল ও জালাল ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় নজরুল ও আফাজ ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।
সেদিন বিকেল চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে ঘটনা কাউকে বললে ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাম্য সালিসে বিচারের চেষ্টা চলে। একপর্যায়ে বিচার না পেয়ে গতকাল রোববার দুপুরে ওই কিশোরীর বাবা সখীপুর থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জানায়, আমার বন্ধুকে নিয়ে আলাপ করছিলাম। হঠাৎ ওরা আমাদের কাছে এসে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে জোরপূর্বক আমাদের তুলে নিয়ে যায়। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।
ওই কিশোরীর বাবা বলেন, আমি অসহায় দরিদ্র মানুষ। আমার মেয়েটার যে বখাটেরা সর্বনাশ করলো, আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হিরো তালুকদার বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এর সঙ্গে জড়িতরা এলাকায় চিহ্নিত বখাটে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এএইচএম লুৎফুল কবির বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই নম্বর আসামি জালাল উদ্দিনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ভিডিও ধারণ করা মুঠোফোনটিও উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুলিশ মাঠে নেমেছে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন