ফেনীতে ছাত্রীকে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা: সেই মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা
ফেনীর সোনাগাজী পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীর গায়ে আগুনে দিয়ে ঝলসে দেয়ার ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ রোববার থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রমও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সকালে ফেনী জেলা প্রশাসকের কক্ষে মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভা হয়। সভায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে সাময়িক বরখাস্ত, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ, আগুন পুড়ে যাওয়া পরীক্ষার্থী নুসরাতের চিকিৎসা খরচ বহন, মাদরাসা ক্যাম্পাসে সিসিটিভি স্থাপন ও সাময়িক মাদরাসার কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিম, সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ অপরাপর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা হোস্টেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই কেন্দ্রে চলমান আলিম পরীক্ষা যথা নিয়মের চলবে।
মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন জানান, কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় সকালে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে প্রবেশের আগে নুসরাতকে কয়েকজন 'মুখোশ পরা' মেয়ে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। তারা নূসরাতকে জানায় যে তার এক বান্ধবীকে ছাদে পেটানো হচ্ছে।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, নূসরাত কয়েকদিন আগে তার মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছিল। সেই ঘটনার জেরে ওই অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা আমার বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।
চিকিৎসকের সামনে পুলিশের জবানবন্দিতে নূসরাতও জানিয়েছেন যে, পরীক্ষার কেন্দ্রের বাইরে তাকে কয়েকটি মুখোশ পরা মেয়ে ডেকে নিয়ে যায় এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলাটি তুলে নিতে বলে। নূসরাত তাতে অস্বীকৃতি জানানোর পরে তারা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়েরাই নূসরাতকে মিথ্যা বলে, পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয় দিয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে এমন অভিযোগে পুলিশের কাছে মামলা করে নূসরাতের পরিবার। পরে পুলিশ ওই মামলার জেরে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়। এই ঘটনার পরপর মাদরাসায় ওই শিক্ষকের পক্ষে বিপক্ষে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে আন্দোলন করতে শুরু করে।
এসএস
মন্তব্য করুন