সময়-অসময়ে ছবি তোলাসহ নানান যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
সময়-অসময়ে ছাত্রীদের সঙ্গে ছবি তোলা, স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওড়না ছাড়া নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করাসহ নানা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল আহেদ। পৌর শহরের মুনশুরপ্রু এলাকার ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা নিপীড়নকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কালিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. শিবলী সাদিক আরটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ তদন্তকারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলম জানান, তদন্ত চলছে, ওই স্কুল পরিদর্শন করেছি। আজকেও (সোমবার) ওই শিক্ষককে ডাকা হয়েছিল। অভিযোগকারী একাধিক ছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলা যাচ্ছে না, আগামীকাল তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ইউএনও’র কাছে জমা দেয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের বদলি হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আব্দুল আহেদ যোগদান করেন। পরবর্তীতে নিয়মানুযায়ী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠতে থাকে।
নবম, দশম শ্রেণির একাধিক ছাত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, প্রায়ই আমাদের সঙ্গে নানা অজুহাতে গায়ে ও স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিত। কাউকে কাউকে আবার বিভিন্ন সময় প্রশ্নপত্র দেয়ার লোভ দেখাতো। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় ছাত্রীদের ওড়না ছাড়া নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করতো। ছাত্রীদের বয়সন্ধিকালে বিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষিকার কাছে না গিয়ে তার কাছে আসতেও পরামর্শ দিতো এবং মাসিকের সময় কি কি করতে হবে, সে ব্যাপারে ছাত্রীদের বলত।
তবে এসব ঘটনা কারো কাছে জানালে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করাবে বলেও তিনি ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ করে ছাত্রীরা।
সেই ভয়ে শুরু থেকে কেউ কিছু না বললেও নিপিড়নকারীর নিপীড়ন অসহ্য মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় ৯ম ও ১০ম শ্রেণির সেই ছাত্রীরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এদিকে অভিযোগের পর থেকে অভিযুক্ত মো. আব্দুল আহেদ বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আব্দুল আহেদ সঙ্গে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এসএস
মন্তব্য করুন