দৌলতদিয়ায় ৭ কিলোমিটার যানবাহনের সারি, যাত্রীদুর্ভোগ
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে গত তিন দিন ধরে। আগামীকাল রোববার প্রথম কর্ম দিবসে অফিসে হাজির থাকার জন্য আজ শনিবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে দৌলতদিয়া ঘাটে।
এসময় তাদের বহন করে আনা গাড়িগুলো যানজটে আটকে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয় নারী, শিশু ও বয়স্করা।
দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে পায়ে হাঁটার পর অনেক শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেককে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়াও।
গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়ে শনিবার সকালের পর থেকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নদীপারের অপেক্ষায় পাঁচ শতাধিক গাড়ি আটকা পরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও বাড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে দৌলতদিয়ায় ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার জুড়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার মহাসড়কের এক পাশে যাত্রীবাহী পরিবহনের দীর্ঘ সারি। অপর দিকে দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কের এক কিলোমিটার জুড়ে নদীপারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে আছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লম্বা হয় যানবাহনের সারি।
ঘাট থেকে মহাসড়কের ছয় কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ পৌরসভার পদ্মার মোড় এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িগুলো বিকল্প সড়ক দিয়ে অন্তত আট কিলোমিটার ঘুরিয়ে ঘাটে পাঠাচ্ছে পুলিশ।
গ্রামের সরু সড়ক দিয়ে বৃষ্টির দিনে পিচ্ছল পথে ঘাটে পৌঁছাতে এসব গাড়িকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পারাপার হতে আসা সব যানবাহন সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছে না।
---------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ফরিদপুর মেডিক্যালে ডেঙ্গুতে কলেজছাত্রের মৃত্যু
---------------------------------------------------------------------
ঈগল পরিবহনের যাত্রী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে কর্মস্থলের উদ্দেশে পরিবারসহ বের হই। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি প্রচুর বাস নদী পারের জন্য অপেক্ষা করছে। সারারাত আমাদের রাস্তাতেই অপেক্ষা করতে হয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আবদুল্লাহ রনি বলেন, দুপুরের পর থেকে স্রোতের মতো বিপুল সংখ্যক যানবাহন নদী পার হতে আসায় মহাসড়কে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে।
তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শেষে কর্মব্যস্ত মানুষ একযোগে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিন পর্যন্ত যানবাহনগুলো অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি ফেরিতে ওঠে। কিন্তু শনিবার সকালের পর থেকে স্রোতের মতো বিপুলসংখ্যক যানবাহন নদী পার হতে আসায় মহাসড়কে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়।
ভিড় সামাল দিতে বিআইডব্লিউটিএ, পুলিশ, র্যাব, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কাজ করেন। দৌলতদিয়া ঘাট ট্রাফিক পুলিশের ইন্সেপেক্টর আবুল বাসার বলেন, ঘাটে আগত যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের নৈতিক কর্তব্য। আমরা চেষ্টা করছি নিয়মের মধ্যে থেকে বাসগুলোকে পার করতে।
এসএস
মন্তব্য করুন