মহাসড়কের গাছ কেটে নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা
লালমনিরহাটে মহাসড়কের দুপাশের গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
রোববার সকালেও লালমনিরহাট বড়বাড়ি মহাসড়কের সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর এলাকায় এসব গাছ কাটতে দেখা যায়। গেল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এ গাছ কাটা।
তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য ও সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে যাওয়া লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কের দু’পাশে লাগানো কড়ই গাছগুলো বিশাল আকার ধারণ করেছে। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি মহাসড়কটির সৌন্দর্য বর্ধনেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এসব গাছ। গত শুক্রবার সকাল থেকে মহাসড়টির মহেন্দ্রনগর-বড়বাড়ি অংশের গাছগুলো কেটে ফেলেন স্থানীয় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন
আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব।
স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের জানানো হয় জেলা পরিষদের পুরাতন হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।
প্রথমদিন চারটি গাছের কথা বলা হলেও গেল তিন দিনে প্রায় ৮-১০টি গাছ কাটা হয়েছে। এরপরও থেমে থাকেনি গাছকাটার মহোৎসব।
করাত মিস্ত্রীদের কাছে জানতে চাইলে তারাও স্বীকার করেন জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লবের ডাকে তারা শ্রমিক হিসেবে গাছ কাটছেন। কর্তনকরা এসব গাছের মূল্য প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা।
স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী সূফী মোহাম্মদ বলেন, গাছগুলো সড়কটিতে বেশ শোভাবর্ধন করে বীরদর্পে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। প্রায় সময় বিভিন্ন অজুহাতে মহেন্দ্রনগর এলাকার জীবন্ত গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব। সড়কটি আর আগের মতো সৌন্দর্য বর্ধন করে না। অবশিষ্ট যে কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়েছিল সেটাও কেটে নিতে নতুন মিশনে নেমেছেন এ নেতা। এ কারণে তাকে স্থানীয়রা গাছকাটা নেতা বলেও জানেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
জেলা পরিষদ সদস্য মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরপত্র না হলেও জেলা পরিষদের পুরাতন হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে কিছু কাঠের প্রয়োজন। তাই জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ৪-৫টি গাছ কাটা হচ্ছে। পুরাতন হলরুম মেরামতের জন্য দেওয়া বরাদ্দ পর্যাপ্ত না হওয়ায় এসব গাছ কর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, জীবন্ত গাছ তো নয়, ওই সড়কের মৃত গাছ কাটারও আপাতত কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জেবি
মন্তব্য করুন