লবণ ক্রেতার চাপে দোকান বন্ধ
হঠাৎ করেই টাঙ্গাইলে লবণের বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। লবণের দাম কেজি প্রতি প্রায় একশ’ থেকে একশ’ বিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এমন গুজবে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন লবণ কিনতে।
গেল সোমবার বিকেল থেকে গুজব ছড়ালেও সন্ধ্যার পর থেকে তা প্রচণ্ড আকারে ছড়িয়ে পড়ে। যা গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আর এতে ক্রেতাদের সামাল দিতে দোকানিদের বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে টাঙ্গাইল শহরের বাজারগুলোতে লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। তবে এ অভিযানে সত্যতা না পেয়ে কাউকে জরিমানা করা হয়নি। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত দাম না নিতে নির্দেশনা এবং কারও কারও কাছ থেকে মুচালেখা নেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা যায়, প্রতি কেজি লবণের দাম একশ’ থেকে একশ’ বিশ টাকা হচ্ছে এমন গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে বেশি মুনাফা লোভে বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা লবণ বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছেন।
এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার বাজারে দেখা যায়, লবণের দাম বেড়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় টাঙ্গাইল শহরের ছয়আনী ও পার্ক বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে লাইন দিয়ে ক্রেতাদের লবণ কিনতে দেখা যায়। বিগত সময়ের তুলনায় এদিনে লবণের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। আর এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দোকানের ব্যবসায়ীদের। যে যেভাবে পারছে দোকান থেকে লবণ ক্রয় করেছেন।
এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতিতে বাজারের মসজিদের মাইকে লবণের দাম বৃদ্ধি পায়নি বলে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল শহরের পার্ক বাজারের লবণ ব্যবসায়ী মাজেদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে ক্রেতাদের প্রচুর চাপ বাড়তে থাকে। সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১৫০ বস্তা লবণ বিক্রি করেছি। আর এতে চাপ সামলাতে না পেরে মাঝখানে দোকান বন্ধ রাখি। অন্যান্য সময়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ বস্তা লবণ বিক্রি হয়। আজ মঙ্গলবার ৬ ঘণ্টায় কয়েকগুণ বেশি লবণ বিক্রি হয়।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: লবণের দাম বেশি রাখায় আট লাখ টাকা জরিমানা
---------------------------------------------------------------
এ ব্যাপারে ওই বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল বারেক মিয়া বলেন, হঠাৎ করে গুজব শুরু হয় বাজারে লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এতে করে লবণের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। তবে লবণের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি। ৭৪ কেজির প্রতি বস্তায় লবণ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায় ২৫ কেজির লবণের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। এছাড়া এসিআই কোম্পানির লবণ ২৫ কেজির প্রতি বস্তায় ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জোয়াহের আলী বলেন, আমাদের এ বাজারে দুই থেকে তিনটি লবণের দোকান রয়েছে। কোনও দোকান থেকেই লবণের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে না। দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ রয়েছে। গুজবের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকনুজ্জামান বলেন, লবণের দাম বাড়ার মতো কোনও কারণ নেই। লবণের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। একটি সিন্ডিকেট মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। তাই গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান করা হয়েছে। বাজারের প্রতিটি দোকানেই লবণের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া কেউ যেন নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রি না করেন সে বিষয়েও ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। ক্রেতারা সঠিক দামেই লবণ কিনছেন। আর কারণে অভিযানে কাউকে জরিমানা করা হয়নি। তবে এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আমাদের এ ধরনের অভিযান চলবে।
জেবি
মন্তব্য করুন