হালদায় ভেসে উঠল মৃত ডলফিন
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ভেসে উঠল মৃত ডলফিন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়ন আকবরিয়া এলাকায় নদী থেকে ডলফিনটি উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
হালদা নদী বিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, মৃত ডলফিনটি নদীতে ভাসতে দেখে এলাকাবাসী হালদা রিভার রিচার্স সেন্টারের কর্মচারী মুন্নাকে ফোনে ঘটনাটি জানায়। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ডলফিনটিকে উদ্ধার করে তীরে আনা হয়। ডলফিনটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নদীতে চলাচল করা বালুবাহী নৌযান বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার প্রপেলারের (পানির নিচে থাকা ইঞ্জিনের সঙ্গে যুক্ত পাখা) আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে।
ডলফিনটির ওজন সাড়ে চার ফুট। ওজন ৩৫ কেজি। এটিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরির ফ্রিজে রাখা হয়েছে।
হালদায় যে ডলফিন দেখা যায়, তা স্থানীয়ভাবে উত্তোম বা শুশুক নামে পরিচিত। মিঠাপানির স্তন্যপায়ী এই প্রাণী গেঞ্জেস বা গাঙ্গেয় ডলফিন। সাধারণত দূষণমুক্ত পানিতে এটি বিচরণ করে।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ছত্তার খালের মুখ থেকে হাটহাজারী উপজেলার মনাঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা ডলফিনের মূল বিচরণক্ষেত্র। আজ যে জায়গায় ডলফিনটি ভেসে ওঠে তা মদুনাঘাট থেকে এক-দুই কিলোমিটার পশ্চিমে।
১০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত ২২টি ডলফিন মারা গেছে। এর মধ্যে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি মারা গিয়েছিল।
মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, আগের মৃত ২১টি ডলফিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় নৌযানের আঘাতে এগুলোর মৃত্যুর কারণ।
ইন্টারন্যাশানাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) ডলফিনের এই প্রজাতিটিকে অতি বিপন্ন (লাল তালিকাভুক্ত) হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
হালদা দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র। সরকার ২০১০ সালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাকে জলজ প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করে।
জেবি
মন্তব্য করুন