• ঢাকা বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

আজ ফেলানী হত্যার ৯ বছর

কুড়িগ্রাম (উত্তর)প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ০৭ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:০৮
হত্যা ফেলানি ভারত
ছবি: সংগৃহীত

আজ সাত জানুয়ারি। সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার নয় বছর। ২০১১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় ফেলানী। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর মৃতদেহ। গণমাধ্যমসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। পরে বিএসএফের বিশেষ কোর্টে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস দেওয়া হয় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে। এ রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে রিট আবেদন করে ফেলানীর পরিবার।

ঘটনার দিনটি ছিলো শুক্রবার। ভোর ছয়টা ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত টপকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে আধাঘণ্টা ধরে ছটফট করে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। এরপর ফেলানীর নিথরদেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের এ কোর্টে সাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ছয় সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফের বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুন:বিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের দুই জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ছয় অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ এবং ১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি এখনও।

এদিকে মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা-মা। ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে জানান, ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে অনেক ঘুরেছি, মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গেছি, বিচার পেলাম না। একসময় সবাই পাশে থাকলেও এখন কেউ পাশে নেই।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান, ফেলানী হত্যার নয় বছর হয়ে গেল কিন্তু বিচার দেয় দেয় বলে দিচ্ছে না, এ হত্যার সঠিক বিচার হলে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পেত। আমি সরকারের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, এখন পর্যন্ত রিটটি তালিকাভুক্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, এটা ঝুলিয়ে না রেখে নিষ্পত্তি করা উচিত।

তবে তিনি আশা ব্যক্ত করেন ভারতীয় উচ্চ আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা উভয় দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য ইতিবাচক হবে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনিটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১ সালের ছয় জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হয় দেশের উদ্দেশে। সাত জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের ওপর মই বেয়ে আসার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ফেলানীর।

জেবি

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ
‘চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি বাংলাদেশের অভ‍্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল’
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ