ঝুঁকিতে শেখ রাসেল সেতু, ঘটতে পারে প্রাণহানি
নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে ভারি যানবাহন ও যাত্রীবাহী বাস চলাচল কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।
বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। জেলার সর্বোচ্চ ও গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয়টি একাধিকবার গুরুত্বসহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বরাবরই শহরের মধ্য দিয়ে ভারী যান ও যাত্রীবাহী বাস চলাচলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সভার অধিকাংশ ব্যক্তি। জেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে গেলেও কোনও ফল হয়নি। ভারি যানবাহন ও যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ হয়নি।
নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া সড়কটি সংকীর্ণ তাই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে ও যানজট নিরসনে শহরের মধ্যে অন্তত দিনের বেলা যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না। বরং দ্রুতগতির বাস ট্রাক বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে শহরের মধ্য দিয়ে। যে কারণে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই আছে। যেকোনো মুহূর্তে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
নড়াইল শহরের একটি সড়ক দিয়েই মূলত সারা শহরের যাতায়াতের ব্যবস্থা।ভারি যান চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা থাকলেও কেন যেন কার্যকর হচ্ছে না। তাছাড়া এ সড়কের পাশেই রয়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত।
প্রতিদিন অফিস টাইমে সড়ক প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে। সকাল আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড চাপ থাকে।শহরের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলি শেখ রাসেল সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে। সে কারণে সেতুতে ভারি যানের চাপ বেড়েই চলেছে। মাঝে-মধ্যে সেতুতে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যাচ্ছে। সেতুর ডিজাইনের কারণে সমস্যা লেগেই আছে। সংকীর্ণ সেতুতে গাড়ি ওঠার পর অপরদিক থেকে আসা গাড়ির সাইড দিতে পারছে না। সে কারণে সেতুর উপরেই লেগে থাকছে যানজট। মাঝে-মধ্যে বিপদজনক যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেতুর ফুটওয়েতে উঠে যাচ্ছে গাড়ি।পথচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাছাড়া ভারি যানবাহন সেতুর ওপরে সামনে-পিছনে গিয়ে অন্য গাড়িকে সাইড দেয়ার চেষ্টা করার কারণে সেতুর ওপর ওভারলোডের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে লোড ট্রাক সেতুর ওপর গিয়ে সামনে পিছনে যাওয়া-আসা করলে সেতু কাঁপছে। আবার অপরদিক থেকে আসা যানবাহনকে সাইড দিতে গিয়ে যাত্রীবাহী বাসের চাকা যখন ফুটওয়েতে আটকে রেলিংয়ের পাশে চলে যাচ্ছে, তখন প্রাণভয়ে যাত্রীরা চিৎকার করছে। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচল করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাস মালিক ও শ্রমিকরা অধিক যাত্রী পাওয়ার আশায় শহরের মধ্য দিয়ে যাত্রবাহী বাস চলাচলের পক্ষে। আর সে কারণেই শহরের মধ্য দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না।
নড়াইলের সচেতন মহল মনে করেন, কোনও জীবনের বিনিময়ে নয়, সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে মানবিক কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে শহরের বাইরে দিয়ে যান চলাচল করাটাই উত্তম। কারণ এমন অপেক্ষায় থাকা আদৌ ঠিক হবে না যে, সত্যিই যদি শহরের মধ্য দিয়ে গাড়ি চলাচলের কারণে মানুষ মরে তো তারপর থেকে গাড়ি শহরের বাইরে দিয়ে চলাচল করবে। সচেতন নড়াইলবাসী অচিরেই শহরের মধ্য দিয়ে যান চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বার বলেন, রাসেল সেতু রক্ষায় ভারি যান চলাচল বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিনের বেলা ভারি যান চলাচল বন্ধে ব্রিজের দুপাশে আটকে দেয়া হবে। শুধুমাত্র হালকা যান চলাচল করবে।
জেবি
মন্তব্য করুন