সাংবাদিকদের হাত-পা ভেঙে দিতে ছাত্রলীগকে প্রভাষকের নির্দেশ
সাতক্ষীরায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দিয়েছেন কলেজের প্রভাষক আব্দুল গফফার। একইসঙ্গে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে ছাত্রলীগকে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করার পরামর্শ দেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতাকে মোবাইলে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় কী কী বলতে হবে আর কী কী করতে হবে।
পাটকেলঘাটা হারুন-অর-রশিদ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওসমানকে এসব দিকনির্দেশনা দেন আব্দুল গফফার। ইতোমধ্যে তাদের কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে।
তবে প্রভাষক আব্দুল গফফারের এমন দিকনির্দেশনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওসমান। সেইসঙ্গে তাদের কথোপকথনের বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন তিনি।
আপনাদের দু’জনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড রয়েছে জানালে ছাত্রলীগ সভাপতি ওসমান বলেন, একজন প্রভাষক বললেই তো আমরা সব করব না। আমরা বুঝি কি করা যাবে আর কি করা যাবে না। কাজেই প্রভাষক বলেছেন, আমি শুনেছি। কি করব আর কি করব না সেটি আমাদের ব্যাপার।
এ ব্যাপারে কলেজের প্রভাষক আব্দুল গফফারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফকির আহম্মেদ শাহ বলেন, আমি বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে এটা বিশ্বাস হয়নি। আর কাউকে হাত-পা ভেঙে দেয়ার ভয় দেখানো অন্যায়।
এদিকে কলেজে মাদকসেবন ও জুয়ার বিষয়ে গেলো মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। তবে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
হারুন-অর-রশিদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আব্দুল গফফার ও ছাত্রলীগের সভাপতি ওসমানের ফোনালাপের বিষয়টি জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়গুলো আমার নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরার হারুন-অর-রশিদ ডিগ্রি কলেজে ক্লাস চলাকালীন মাদকসেবন ও জুয়া খেলায় মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কার্যালয়ের দোতলার একটি কক্ষে এমন কর্মকাণ্ড চললেও কিছুই জানে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার নিজের চোখে মাদকসেবন ও জুয়া খেলার সামগ্রী দেখার পর হতবাক হন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তার আগেই কলেজ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান জুয়া খেলায় লিপ্ত পাঁচ শিক্ষার্থী।
এরপরও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করেন, কলেজে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। এ ঘটনায় ভিডিওসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পরই সংবাদকর্মীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন প্রভাষক আব্দুল গফফার। বিএনপি সরকারের সময়ে আব্দুল গফফার ছিলেন বিএনপির নেতা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হন এই প্রভাষক।
জেবি
মন্তব্য করুন