• ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
logo

বিলুপ্তির পথে ফাগুনে আগুন জ্বালানো শিমুল গাছ

হিলি প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ০৩ মার্চ ২০২০, ১১:৫৩
শিমুল গাছ ফুল
ছবি: সংগৃহীত

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রাম-বাংলার প্রকৃতিকে রাঙিয়ে ফুটেছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল কিন্তু কালের বিবর্তনে হিলিতে আগুন ঝরা ফাগুনে চোখ জ্বলসানো গার লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তপ্রায়

বিগত এক যুগ আগেও এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে আর রাস্তার ঢালে প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত প্রতিটি গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিত বসন্ত এসেছে দ্বারে

অন্যান্য গাছের তুলনায় শিমুল গাছ অনেক উঁচু হওয়ায় বহু দূর থেকে মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে শুধু সৌন্দর্যই নয়, শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা অর্থনৈতিক গুরুত্ব

প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনও নানা রোগের চিকিৎসায় গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নামবোমবাক্স সাইবা লিন এটি বোমবাকাসিয়াক পরিবারের উদ্ভিদ বীজ কাণ্ডের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয় রোপণের - বছরের মধ্যে শিমুল গাছে ফুল ফুটে৮০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়

নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে শিমুল গাছ দেড়শ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে শীতের শেষে পাতা ঝরে পড়ে বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে আর ফুল থেকেই হয় ফল চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয় বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয় অন্যান্য গাছের মতো গাছ কেউ শখ করে লাগায় না নেয়া হয় না কোনও যত্ন অযত্নে অনাদরে প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে

গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে এর ছাল, পাতা ফুল গবাদি পশুর খুব প্রিয় খাদ্য বালিশ, লেপ তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই অথচ বর্তমানে মানুষ গাছকে তুচ্ছ মনে করে কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে অতীতে ব্যাপক হারে নির্মাণ কাজ, টুথপিকসহ নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ

হাকিমপুর উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মতিউর রহমান আরটিভি অনলাইনকে জানান, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল এই শিমুল ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিষফোঁড়া কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূল ব্যবহার করত

হাকিমপুর উপজেলার কাদিপুর গ্রামের আব্বাস আলী আরটিভি অনলাইনকে জানান, একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে এরপরও এই গাছ নিধন হচ্ছে প্রতিনিয়ত

হাকিমপুর উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, শিমুল গাছ রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা না নিলে এক সময় উপকারী গাছের তালিকা থেকে গাছটি হারিয়ে যাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো জানতেও পারবে না বাংলার মাটিতে শিমুল নামের কোনও গাছ ছিল

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. শামীমা নাজনীন আরটিভি অনলাইনকে জানান, বাণিজ্যিভাবে হাকিমপুর উপজেলাতে এই শিমুল গাছ চাষ করা হয় না এটি প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠে যার কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছটি এর তুলার মান অনেক ভালো, যদি শিমুল গাছের বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় তবে মানুষের অনেক উপকার হবে

জেবি

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সাত মাস পর মাঠে গড়াল হকি, আশরাফুলের ৫ গোলে শুরু 
হিলিতে কমেছে আলু-পেঁয়াজের দাম
কর্ণফুলীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন