তাদের ক্ষুধার কাছে করোনা কিছুই না!
করোনার বিধি-নিষেধ না মেনে মোংলায় কয়েকশ’ নারী-পুরুষ নদ-নদীতে চিংড়ি পোনা আহরণ করছেন। দেশের সরকারি নির্দেশনা না মেনে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে পোনা আহরণের ওই যত্রতত্র কার্যক্রম। উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনিতে এমন চিত্র দেখা গেছে। চিংড়ি পোনা আহরণকারী প্রান্তিক জেলেরা বলছেন পেটের দায়ে তারা তারা মাছ ধরছেন।
তবে স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, পোনা আহরণ করতে গিয়ে করোনার সংক্রমণ বাড়াতে পারে ওইসব অসচেতন মানুষগুলো।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে জয়মনিতে গেলে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সরকারি নির্দেশনা মেনে মানুষ যখন নিজ ঘরে অবস্থান করছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করছে চলাফেরা-তখন একেবারে ভিন্ন চিত্র মোংলার জয়মনির নদীতে।
কয়েকশ’ নারী-পুরুষ দল বেঁধে নদীতে নিষিদ্ধ নেট জাল দিয়ে চিংড়ির পোনা আহরণ করছেন। এ সময় কথা হয় জেলে আব্দুল মালেক, রহিমন বেগম, আমির হোসেন ও জাহানারা বেগমের সঙ্গে। তারা বলেন, করোনা নিয়ে নয় তাদের চিন্তা শুধুমাত্র খাদ্যের জোগান নিয়ে।
পেটে যদি না মানে মৃত্যুর ভয় করে লাভ আছে? মৃত্যুতো একদিন হবে। ঘরে চাল নাই ছেলেমেয়েদের খাবার কে দিবে? তাই নদীতে নেমে পড়েছি।
আরেক জেলে বলেন, আজ মাছ না ধরলে কাল না খেয়ে মরে যাব, এই সময় যে ত্রাণ পাচ্ছি দুই কেজি চাল, দুই কেজি আলু আর ডাল! তা দিয়ে দুবেলা চলবে তারপর কী হবে?
চিলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জানান, জেলেদের কোনোভাবেই বুঝানো যাচ্ছে না, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যত্রতত্র পোনা আহরণের কারনে সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে ওই অসচেতন জেলেদের মাধ্যমে।
পরিবেশবাদী পশুর রিভার ওয়াটার কিপার মো. নুর আলম শেখ জানান, বিশ্বব্যাপী যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে-ঘনত্বের দিক দিয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ ঘোষিত যে খাল বা নদীতে জেলেরা অবাধে মাছ ধরছে সেখানে সংশ্লিষ্টদের কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মরণঘাতক করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে যখন নিজ নিজ ঘরে আবদ্ধ মানুষ, তখন মোংলা জয়মনি নৌ থানার মাত্র আধা কিলোমিটারের মধ্যে যত্রতত্র নারী পুরুষদের পোনা আহরণ কতুটুকু যৌক্তিক-এমন প্রশ্নের জবাবে নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হোসেন শরিফ বলেন, এখানকার জেলেরা অত্যান্ত গরিব মানুষ। পেটের দায়ে অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়েছে তাদের কি করবে বলেন?’
তারপরও এসব ঠেকাতে মাঝে মধ্যে আমরা অভিযান চালাচ্ছি বলে জানান তিনি।
জেবি
মন্তব্য করুন