মধুপুরে দাদা-নাতি মিলে রাতভর কিশোরীকে ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে দাদা-নাতি মিলে কিশোরীকে অপহরণের পর নিজ বাড়িতে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কালিয়াকুড়ি গ্রামে গেল শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করলেও একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। ফলে অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ এখন পর্যন্তও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি ।
জানা যায়, উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের কালিয়াকুড়ি গ্রামের নাতি কিশোর চান মিয়া (১৪) ও দাদা কবির হোসেন ওরফে কবজ (৫০) পাশের হাগুড়াকুড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের এক কিশোরীকে (১৩) গেল ৩০ মে দুপুরে বাড়ির পাশ থেকে অপহরণ করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।
পরে স্থানীয় ফরিদ মিয়ার বাড়ির পূর্ব পাশের ঘরের উত্তর পাশের কক্ষে দাদা-নাতি ওই কিশোরীকে রাতভর ধর্ষণ করে। পরদিন রোববার ওই কিশোরীকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। ওই কিশোরীর বাবা-মা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় কবির হোসেন ওরফে কবজের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ফেরত চাইলে তাদের কাছে নেই বলে জানায়।
পরে ওই কিশোরী অসুস্থবস্থায় বাড়িতে গিয়ে পুরো ঘটনা তার মাকে খুলে বলে। কিশোরীর অসহায় বাবা স্থানীয় মাতব্বর ও ইউপি সদস্যকে ঘটনা জানায়। পরে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গেল এক জুন মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে স্থানীয় ফরিদ মিয়ার নেতৃত্বে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল নানাভাবে অপতৎপরতা শুরু করে। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকালে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মাতব্বরদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও দরকষাকষির একপর্যায়ে ফরিদ মিয়া ওই কিশোরীর বাবাকে বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যেতে হুমকি দেয়। কিশোরীর বাবাকে হুমকি দেয়ায় স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ থেকে উঠে চলে যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবির হোসেন ওরফে কবজ (দাদা) জানান, নাতির সঙ্গে ওই কিশোরীর কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। শাশুড়ি অসুস্থ থাকায় তিনি শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নওশের আলী জানান, কিশোরীকে ধর্ষণের বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে ওপেন সিক্রেট। ধর্ষকের ভাই মো. ফরিদ মিয়া প্রভাবশালী হওয়ায় তারা বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা করছে। থানায় মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল জানান, থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জেবি
মন্তব্য করুন