নিঝুমদ্বীপে মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
হাতিয়ার ১নং নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেই চেয়ারম্যান।
জানা যায়, গত ৩০ মে স্থানীয় ১১নং নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ৬৯ জন সুবিধাভোগীদের মধ্যে ৯ মাসের মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণ করেন নির্ধারিত ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ৯ মাসের ভাতা হিসেবে তাদের এককালীন ৭ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এ থেকে চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদার প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে নিয়ে নেন।
চেয়ারম্যানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ না করে বাকী টাকা নিয়ে ফিরে যান। তবে, স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের চা দোকানদার মো. সালা উদ্দিন (৫৫) তার পুত্রবধূ রুপা আক্তারের অবশিষ্ট চেয়ারম্যানকে ফেরত দিয়ে আসেন।
একই অভিযোগ নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিমের স্ত্রী মরজিনা বেগম (২২), আজমির হোসেনের স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম (২৬), ১নং ওয়ার্ডের বাতায়ন কিল্লা গুচ্ছ গ্রামের মনির উদ্দিনের স্ত্রী সুমা(২২), একই ওয়ার্ডের মো. এরশাদের স্ত্রী রুবিনা আক্তার সুমি (২০) ও ২নং ওয়ার্ডের আব্দুল কাদেরের স্ত্রী ফেরদৌস বেগমের (৩৫)।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খবির উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কেফায়েত উল্যাহ, ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন ও ৪,৫,৯নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য তাহেরা বেগম। তারা বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা কেটে রাখার বিষয়ে সংবাদ পেয়ে চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।
তবে, চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা। কিছু মহিলার ক্ষেত্রে শশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তাদের টাকা ভাগ করে দিয়েছি মাত্র।
এদিকে জাহাজমারা সোনালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শ্রীবাস চন্দ্র দাস জানান, নিঝুমদ্বীপে টাকা বিতরণ করে আসার সময় ঘাটে কয়েকজন আমাদের মহিলাদের টাকার একটি অংশ কেটে রাখার বিষয়টি বলেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এরপর থেকে আর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে টাকা বিতরণ করবো না।
হাতিয়া মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চন্দন চক্রবর্তী জানান, হাতিয়াতে বর্তমান অর্থ বছরে ১১টি ইউনিয়নে ৮৪০ জনকে প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তারা আগামী দুই বছর এ ভাতা পাবেন। সবাইকে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে এ ভাতা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে প্রত্যেকের নিজ নিজ নামে একাউন্ট করা আছে। এসব টাকা একাউন্টে এসে জমা হয়। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কোনও তদারকি করার সুযোগ রাখা হয়নি। তবে কেউ যদি কারও টাকা নিয়ে নেয় সে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিব।
এজে
মন্তব্য করুন