পাবনায় মোবাইল ফোন চুরির দোষ দিয়ে গৃহকর্মীকে হত্যা
মোবাইল ফোন চুরির অপরাধে পাবনায় এক গৃহকর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কথিত এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। নিহত গৃহকর্মী পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা থানার লোহাগাড়া চমরপুর গ্রামের জয়নালের স্ত্রী। একই এলাকার মোহামম্মদ মৃধার মেয়ে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে পাবনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রেলগেটসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর চারতলা থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠলেও অনেকে বলছে নির্যাতনের পর মালেকা মারা গেলে বাড়ির পেছনে মরদেহ ফেলে দেয়। তবে আব্দুল আলিমের বিশাল ক্যাডারবাহিনী থাকায় স্থানীয়রা ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, বাড়ির পেছনে চারতলা ভবনের পেছন থেকে মরদেহ তুলে নিয়ে হাসপাতালে না গিয়ে লুকোচুরি খেলা হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদ জানান, যদি মালেকা আত্মহত্যা করেই থাকে তবে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করার দরকার ছিল। তিনি তা না করে মরদেহ নিয়ে নিহত মালেকার স্বামীর বাড়িতে যাওয়া বা দাফনের চেষ্টা করা আইনের দৃষ্টিতে সঠিক হয়নি। তবে এমন একটা ঘটনায় পুলিশকে না জানিয়ে মরদেহ দাফনের চেষ্টা সন্দেহজনক। ঘটনার পর থেকে আলীম পলাতক রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আহত মালেকাকে হাসপাতালে পাঠানোর নাম করে আলীমের পরিবারের লোকজন দ্রুত অটোরিকশায় করে তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলে ও সময়ক্ষেপণ করে। পরে মালেকা মারা গেলে পুলিশকে না জানিয়েই গোপনে গ্রামের বাড়ি চোমরপুরে পাঠিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে আলীমের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশ নিহত মালেকার গ্রামের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আলীমের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী দল চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, আলিম বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় টার্মিনালের আশপাশে অবস্থিত দোকান-পাট থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়, পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের আশেপাশে অবস্থিত আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করারও অভিযোগ রয়েছে।
পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ও পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেবি
মন্তব্য করুন