• ঢাকা রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
চাঁদপুরে ৭৪০ কেজি পলিথিন জব্দ, দুই ব্যবসায়ীর জরিমানা
মৎস্য খামার থেকে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় নিখোঁজের চার দিন পর একটি মৎস্য খামার থেকে আতিক মজুমদার (৩২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হালিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  আতিক উপজেলার ১ নম্বর সাচার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন মজুমদারের ছেলে। এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, আতিক কচুয়ার গোঘরার বিলে মৎস্য খামারের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। চার দিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মরদেহ ওই খামারে ভেসে উঠতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী।  ওসি বলেন, মৎস্য খামারের মেশিনের সঙ্গে তার পা আটকে ছিল। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত সাপেক্ষে এটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবার। আরটিভি/এএএ/এস
চাঁদপুরে নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ ও জরিমানা
চাঁদপুরে ৪৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১
চাঁদপুরে ২ হাসপাতাল সিলগালা, একটিকে জরিমানা
পা পিছলে নদীতে পড়া নারীকে উদ্ধার করল নৌপুলিশ
পাঁচ ঘণ্টা পর চাঁদপুর-শরীয়তপুর রুটে ফেরি চলাচল শুরু
চাঁদপুরে শীতের তীব্রতার সাথে বেড়েছে ঘন কুয়াশা। যার ফলে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ রুটে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ ছিলো ফেরি চলাচল। কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় ভোর ৪টায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় হরিণা ও নরসিংহপুর আলু বাজার ঘাটের ফেরি চলাচল। পরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় আজ সকাল ৯টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) হরিণা ফেরিঘাটের ম্যানেজার (বাণিজ্য) ফয়সাল আলম চৌধুরী।  তিনি বলেন, রোববার (৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে কুয়াশা বেড়ে যায়। যার ফলে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ রুটে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোর রাত ৪টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। সকাল ৯টার পর থেকে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ও হরিণা ঘাট থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক। পাঁচ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকায় অল্প কিছু যানবাহন আটকা পড়ে।  তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে মাঝে মাঝে কুয়াশা বেড়ে যায়। তখন আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখি। এই বিষয়ে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পূর্ব থেকেই নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন।
গুলি করে ৩ যুবদল কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ১১ বছর পর মামলা
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে জাহাঙ্গীর বেপারী, আরিফ হোসেন ও বাবুল ভূঁইয়া নামে যুবদলের ৩ কর্মী হত্যার ঘটনায় ১১ বছর পর ৩৩৫ জনকে নামীয় এবং ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন হত্যার শিকার যুবদল কর্মী আরিফ হোসেনের ভাই মো. দেলোয়ার হোসেন। রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার আইনজীবী মো. আবুল খায়ের স্বপন। মামলায় আসামি করা হয় ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আবু ছায়েদ সরকার, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম কাজল বিএসসি, পৌর সভার সাবেক মেয়র মাহফুজুল হক, মো. মাসুদ হোসেন ভূঞা (কিলার মাসুদ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. অহিদুর রহমান অহিদ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম রিপন, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী আকবর হোসেন মনিরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর শুক্রবার তৎকালীন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের আহ্বানে ডাকা মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘষের্র সময় গুলিতে নিহত হন যুবদল কর্মী জাহাঙ্গীর বেপারী, আরিফ হোসেন ও বাবুল ভূঁইয়া। এই ঘটনায় ওইদিন অনেকেই আহত হন। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিকাল ৪টায় বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ মিছিলে আসামিদের নির্দেশে তৎকালীন থানা পুলিশের সহযোগিতায় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। হামলায় ৩ জন নিহত, অনেক নেতাকর্মী গুরুতর আহত এবং কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেন। নিহত জাহাঙ্গীর বেপারী উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিনকড়ি বেপারী বাড়ির আ. মতিন বেপারী ও তফুরের নেছা দম্পতির ছোট ছেলে। রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগমের ছেলে বাবুল ভূঁইয়া।  নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলাগুলোর অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১১ বছরের অধিক সময় মুখ বুঝে সব সহ্য করলেও গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে বিচারের আশা করছেন ওই তিন পরিবারের স্বজনরা। তারই ধারাবাহিকতায় নিহত আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন ৭৩৫ জনের নামে মামলা করেন। মামলার আইনজীবী মো. আবুল খায়ের স্বপন বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নেওয়ার পর তৎকালীন সময়ে ফরিদগঞ্জ থানায় যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে ওই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য থানাকে নির্দেশ দেন। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মামলাটির পরবর্তী নির্দেশনা আসবে। আরটিভি/এফআই
চাঁদপুরে নৌবন্দর নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত ১২৭ জনকে চেক হস্তান্তর
চাঁদপুরে আধুনিক নৌবন্দর নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত ১২৭ পরিবার ও ব্যবসায়ীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার চেক প্রদান করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে এসব চেক তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) চাঁদপুর বড় স্টেশন মাদরাসা রোডস্থ দারুল উলুম মাদরাসা মাঠে সোশ্যাল এনজিও এর সহায়তায় চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও আধুনিক নৌবন্দর নির্মাণ কাজের প্রকল্প পরিচালক মো. আইয়ুব আলীর পরিচালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন  চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব চক্রবর্তী, প্রকল্প পরিচালক মো. ফরহাদুজ্জামান, পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশিদসহ সুধীজন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, দেশব্যাপী ব্রিটিশদের আমল থেকে চাঁদপুর নদী বন্দরের সুনাম রয়েছে। চাঁদপুরসহ আশপাশের মানুষের জন্য এই টার্মিনালটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি দৃশ্যমান বিস্ময়কর একটি টার্মিনাল হবে। যারা টাকা পাবেন তারা নিজ দায়িত্বে স্থাপনা সরিয়ে নিবেন। এর ব্যত্যয় হয় ৩ দিনের মধ্যে খালি করা হবে। একই জায়গার জন্য আপনারা ২ বার ক্ষতিপূরণ পেলেন। এই টার্মিনাল হলে এর সুফল আপনারাই ভোগ করবেন। কক্সবাজারের মতো চাঁদপুরে একটা রিভার ড্রাইভ নির্মাণ হবে। এখানে পর্যটনের জন্য রিসোর্ট তৈরি হবে। আগামী ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে কাজ শেষ করতে হবে। নৌবন্দর নির্মাণ কাজের প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ব্যবসায়ীদের চেক প্রাপ্তির এক সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান স্থান ত্যাগ করতে হবে। আরটিভি/এএএ   
চাঁদপুর মুক্ত দিবস আজ
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হয়েছিল। এদিনে চাঁদপুর সদর মডেল থানার সামনে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ প্রথম চাঁদপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তির সংগ্রামে জেলার মুক্তিকামী জনতা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল চাঁদপুরে পাক হানাদার বাহিনী দুইটি বিমান থেকে সেলিংয়ের মাধ্যমে প্রথম আক্রমণের সূচনা করেছিল। প্রথম দিনেই হামলায় শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরান বাজারের এক নারী পথচারী নিহত হয়েছিলেন। পর দিন বিকেলে প্রায় পাঁচ শতাধিক পাকসেনার একটি বহর চাঁদপুর আসে। শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়টি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে পাকিস্তানি সেনারা। আর পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজটি নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই স্কুলের মাঠ থেকে প্রতিদিনের মতো লতুফা বেগম নামে এক বৃদ্ধা গরু-ছাগল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা রাতের আহার জোগাড় করার জন্য প্রথম অপারেশন হিসেবে ওই বৃদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে এবং বৃদ্ধার একটি গরু ও একটি ছাগল নিয়ে যায়। এপ্রিল থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের চলে দফায় দফায় গোলাগুলি। পরে গঠন করা হয় শান্তিবাহিনী। তারপর নতুন কায়দায় শান্তি বাহিনী ও পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় চালাতে থাকে বর্বর অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ। ৩৬ ঘণ্টা যুদ্ধের পর পালিয়ে যায় তারা। এভাবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের দোসররা কত লোককে হত্যা করেছে তার কোনো হিসেবে নেই। চাঁদপুর জেলায় (তৎকালীন মহকুমা) সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর লাকসাম ও মুদাফ্ফরগঞ্জ মুক্ত হওয়ার পর। যৌথ বাহিনী হাজীগঞ্জ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর আসতে থাকলে মুক্তিসেনারা হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ভারতীয় গার্ডস রেজিমেন্টের নেতৃত্বে ৩১১তম মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণ চালায়। দিশা না পেয়ে পাকিস্তান ৩৯ অস্থায়ী ডিভিশনের কমান্ডিং অফিসার মেজর জেনারেল রহিম খানের নেতৃত্বে দুটি জাহাজে করে নৌ-পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় মুক্তি বাহিনী, মিত্র বাহিনীর ট্যাংক ও বিমান আক্রমণে চির কবর রচনা হয় নদীতে। চাঁদপুর মুক্ত দিবসের আগের ঘটনার বর্ণনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাষ্টার। তিনি সদর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ৮ ডিসেম্বর সকালে আমাদের সহযোদ্ধা শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া, হোসেন ব্যাপারী বহরিয়া বাজারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় পাক সেনাদের একটি জাহাজ মেঘনা নদী দিয়ে চাঁদপুরের দিকে যাচ্ছিল। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানান দিতে আমার হাতে থাকা গ্রেনেড ছুড়ি। তখন আওয়াজ হলে পাকবাহিনী পাল্টা গুলি ছুড়ে। তখন ওয়াবদা সংলগ্ন ওই স্থানে একটি গবাদি পশু এবং একটি কিশোর ছেলের মৃত্যু হয়। এরপর পাকবাহিনী তিন নদীর মোহনায় আসার পরে মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসর্মণ করে। এভাবেই ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলমুক্ত হয়। ৮ এপ্রিল রাতেই চাঁদপুরে অবস্থানরত ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা বিচ্ছিন্নভাবে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালায়। পাকিস্তানি হানাদাররাও এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে প্রতিহত করতে থাকে। তখন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা মারাত্মক আহত হন। ৯ এপ্রিল ভোরে পাকিস্তানি মিলিটারি শহরে ঢুকে চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইসমাইল হোসেন ভলান্টিয়ার (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা শহরের হাসান আলী হাইস্কুলের মোড়ে আপাক ও মাখন নামে দুই যুবককে সাইকেলে চালাতে দেখে গুলি করে হত্যা করে। এর পরেই তারা শুরু করে তাদের মূল অপারেশন কার্যক্রম। এ জন্য চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় হানাদার বাহিনীর একটি টর্চার সেল করা হয়। এখানে চাঁদপুর রেলপথ, সড়কপথ এবং নৌ-পথে যে সব যাত্রীদের সন্দেহ হয়েছে তাদের ধরে এনে অমানবিক নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ করা হতো। পরে ওই মরদেহগুলো মেঘনা এবং পদ্মা নদীতে ফেলে দিতো। যার সাক্ষী আজও পদ্মা-মেঘনা নদী বহন করছে। চাঁদপুরের আরেক বীরমুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা বলেন, ৮ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর হাত থেকে প্রথম চাঁদপুর স্বাধীন হয়। মিত্রবাহিনী ৬ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ অতিক্রম করে ৭ ডিসেম্বর রাতে আমরা চাঁদপুরমুক্ত করি। ওই রাতে সকল মুক্তিযোদ্ধারা জেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছিলো। ভোরে সকল মুক্তিযোদ্ধারা চাঁদপুরে চলে আসেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে জানাজানি হয় চাঁদপুর মুক্ত হয়েছে। তখন সকলেই জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১৩ সালে বড় স্টেশনে ‘রক্তধারা’ নামে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়। এর আগে চাঁদপুরের প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কালাম, খালেক, সুশিল ও শংকরের নামে ট্রাক রোডে নির্মাণ করা হয় ‘মুক্তিসৌধ’ এবং চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে লেকের ওপর দৃশ্যত ভাসমান মুক্তিস্মৃতি সৌধ ‘অঙ্গীকার’ নির্মাণ করা হয়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ জেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার ৫ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় ‘শপথ চত্বর’। ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর সার্বজনীনভাবে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অঙ্গীকারের পাদদেশে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মৃতিকে স্মরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য এই মেলার আয়োজন হয়ে আসছিল। ২০২৩ সালে স্থান পরিবর্তন করে এই মেলার আয়োজন হয় শহরের আউটার স্টেডিয়ামে। তবে এ বছর এই মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়নি। আরটিভি/এএএ   
চাঁদপুরে ৪ প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৭৫ কেজি পলিথিন জব্দ
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৭৫ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরী। পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক বাজার ও ঠাকুর বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় বিসমিল্লাহ পারফিউমারি নামক একটি গোডাউন থেকে প্রায় ৫২৫ কেজি, ভাই ভাই স্টোর, উত্তম স্টোর ও হাজী ক্লথ স্টোর নামক নামক ৩টি দোকান থেকে প্রায় ২৫০ কেজি অবৈধ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ করা হয়। এ সময় অবৈধ পলিথিন বিক্রির দায়ে ৪ দোকান এর মালিককে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য-পূর্বক আদায় করা হয়। এছাড়া শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্প এর আওতায় শব্দ দূষণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ওয়ারুক বাজার এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণের দায়ে যানবাহনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় এবং একটি যাত্রীবাহী বাসে ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং দুটি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রসিকিউশন প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হান্নান ও পরিদর্শক শরমিতা আহমেদ লিয়া।  অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর এর অন্যান্য কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শাহরাস্তি থানার একদল চৌকস পুলিশ সদস্য সহযোগিতা করেন।  আরটিভি/এএএ 
চাঁদপুরে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্য আটক
চাঁদপুর শহরে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্য আটক করেছে পুলিশ।  বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের শহরের আদর্শ মুসলিম পাড়া ও মোমিন পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- শহরের প্রফেসার পাড়া এলাকার ইউসুফ ব্যাপারীর ছেলে ইব্রাহিম ইউসুফ আবির (১৯) ও বড় স্টেশন এলাকার দেওয়ান বাড়ির হাশিম দেওয়ানের ছেলে সিয়াম হোসেস (১৪)।   চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহার মিয়া জানান, শহরের আদর্শ মুসলিম পাড়া ও মোমিন পাড়ার এলাকায় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে দেশীয় অস্ত্রসহ ২ জনকে আটক করে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।  তিনি আরও জানান, কিশোর গ্যাংয়ে নির্মূল করার লক্ষ্যে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিবের নির্দেশে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আরটিভি/এএএ/এস